Puja Pandal

খোলামেলা মণ্ডপের নির্দেশে বেকায়দায় অনেক পুজো

বুধবার উত্তর থেকে দক্ষিণে ঘুরে দেখা গেল, এমন পরিস্থিতিতে খানিক স্বস্তিতে পার্কে বা মাঠে মণ্ডপ হওয়া জগৎ মুখার্জি পার্ক, কুমোরটুলি পার্ক, বোসপুকুর সর্বজনীন, চেতলা অগ্রণী, গৌরীবেড়িয়া সর্বজনীনের পুজোকর্তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২০ ০২:৩৮
Share:

সমাজসেবী সঙ্ঘে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

সামনে একটি পুজো, পিছনে আরও একটি। কোন পথে দর্শনার্থীদের বার করলে অন্য পুজোয় তাঁরা সহজে পৌঁছতে পারবেন, তা খেয়াল রাখতে হয়। পুলিশের পথ-বিধি মেনে চলাও বড় ব্যাপার। তাই পুজোর ২১ দিন আগে তিন দিক খোলা মণ্ডপ করতে গিয়ে বহু পুজো কমিটিই বেকায়দায় পড়েছে। তারা ভেবেই পাচ্ছে না, সরু রাস্তার থিমের মণ্ডপে প্রবেশ-প্রস্থানের একাধিক পথ বেরোবে কী ভাবে?

Advertisement

বুধবার উত্তর থেকে দক্ষিণে ঘুরে দেখা গেল, এমন পরিস্থিতিতে খানিক স্বস্তিতে পার্কে বা মাঠে মণ্ডপ হওয়া জগৎ মুখার্জি পার্ক, কুমোরটুলি পার্ক, বোসপুকুর সর্বজনীন, চেতলা অগ্রণী, গৌরীবেড়িয়া সর্বজনীনের পুজোকর্তারা। তাঁরা বিধি মেনে খোলামেলা মণ্ডপ করছেন। আর সব জায়গায় প্রবেশপথের পাশাপাশি বেরোনোর অন্তত দু’টি করে দরজা রয়েছে। একমাত্র চেতলা অগ্রণীতেই প্রবেশ-প্রস্থানে কিছুটা অদলবদল হয়েছে। সেখানকার থিম শিল্পী অনির্বাণ দাস বলেন, ‘‘দর্শনার্থীদের পার্কের এক দিকের দরজা দিয়ে প্রবেশ করিয়ে প্রতিমার সামনে ঘুরিয়ে পার্কের অন্য দরজা দিয়ে বার করানো হবে। একটু আড়াল রাখতে এই ব্যবস্থা।’’ দক্ষিণ কলকাতার একটি পার্কের পুজোকর্তা বললেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মতো আমরা মণ্ডপ করতে পারি। কিন্তু রাস্তার উপরের মণ্ডপ কী ভাবে নির্দেশ মানবে? পুলিশের সঙ্গে বার বার বৈঠক করেও মণ্ডপ কেমন হবে, ওদের অনেকেই ঠিক করতে পারেনি।’’

যেমন, উত্তরের লালাবাগান নবাঙ্কুর সঙ্ঘ। থিম অনুযায়ী মণ্ডপ করতে গিয়ে মাত্র একটিই দরজা রেখেছিল। দড়ি দিয়ে প্রবেশ ও প্রস্থান আলাদা করার পরিকল্পনা ছিল। নবান্নের ঘোষণার পরে দরজা বদল করতে হচ্ছে তাদের। ওই পুজোর এক কর্তা তাপস রায় বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলার পরে ঢোকার একটি এবং বেরোনোর দু’টি পথ করছি আমরা।’’ একই সংশয়ে করবাগান, কবিরাজবাগান ও তেলেঙ্গাবাগানের মতো পুজো কমিটি। কুমোরটুলি সর্বজনীন প্রতি বারের মতো এ বার আর মণ্ডপে প্রবেশের ব্যবস্থা রাখছে না। যে পথে দর্শনার্থীরা আসবেন, সেই পথেই দড়ি দিয়ে ঘুরিয়ে তাঁদের বার করার পরিকল্পনা করেছে তারা। তবে এখনও সবগুলোই পরিকল্পনার স্তরে।

Advertisement

দক্ষিণ কলকাতার লেক ভিউ রোডের সমাজসেবীর পুজোয় সুন্দরবনের একটি গ্রামের দৃশ্য তুলে ধরা হচ্ছে। মাথার উপরে তৈরি হচ্ছে বাঁশের সেতু। এই পুজোতেও প্রবেশ এবং প্রস্থানের ব্যবস্থা চূড়ান্ত নয়। পুজোর কর্তা অরিজিৎ মৈত্র বললেন, ‘‘একটি সেতুর নীচ দিয়ে দর্শনার্থীদের ঢুকিয়ে প্রতিমার সামনে ঘুরিয়ে মণ্ডপের বাইরের রাস্তা দিয়ে বার করার পরিকল্পনা আছে। অবশ্য রাস্তা থেকেও প্রতিমা দেখানো যেত।’’ শেষ মুহূর্তে কোনটা হবে? স্থান সঙ্কুলানের কথা জানিয়ে উদ্যোক্তার দাবি, ‘‘আপাতত সেতুর নীচ দিয়ে নিয়ে যাওয়াই ঠিক আছে। রাস্তা ব্যবহার না করলে দূরত্ব-বিধি বজায় রাখা শক্ত হবে।’’ এই সংশয়ের মধ্যেই ত্রিধারা সম্মিলনী এখনও পর্যন্ত স্রেফ চারটি বাঁশ পুঁতেছে। মনোহরপুকুর রোডের যে অংশে ওই পুজো হয়, সেখানে দেখা গেল, কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা চলছে দর্শনার্থীদের যাতায়াত নিয়ে।

ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সম্পাদক তথা হাতিবাগান সর্বজনীনের পুজোকর্তা শাশ্বত বসু বললেন, ‘‘পার্ক বা মাঠের পুজো এ বার বাড়তি সুবিধা পাবেই। তবে আমাদের রাস্তার উপরের পুজো হলেও প্রবেশের জন্য একটি ১৬ ফুটের দরজা আর বেরোনোর জন্য দু’দিকে আট ফুটের মোট চারটি দরজা করছি। ভেবে পরিকল্পনা করলে করোনা-কালেও ভাল পুজো করা যায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement