ফাইল চিত্র।
মাধুরী দীক্ষিতকে আনতে হলে দিতে হবে ৪০ লক্ষ! টাকার অঙ্কটা শুনে এগোনো যায়নি! তাঁর পরিবর্তে পি ভি সিন্ধুকে পাওয়া গিয়েছে অর্ধেক টাকায়। মাধুরীর পরেই অবশ্য তালিকায় রয়েছেন শিল্পা শেট্টি আর সোনাক্ষী সিংহ। তাঁদের জন্য হাতে গোনা পুজো উদ্যোক্তাই ২৫ থেকে ৩৫ লক্ষ খসাতে রাজি। তবে এর বাইরে সে ভাবে তারকা যোগের খবর নেই এ বারের কলকাতার পুজোয়। যার জেরে অনেকেরই প্রশ্ন, এ বারের পুজো কি তবে তারা-হারা?
এই তারকাদের আনার ক্ষেত্রে যাঁরা যোগাযোগ ও মধ্যস্থতার কাজ করেন, তাঁদের অবশ্য বক্তব্য, দেশজোড়া আর্থিক মন্দায় কর্পোরেট স্পনসরশিপের অভাবে এমনিতেই বহু পুজোর বাজেট কমেছে এ বার। তার সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে দলনেত্রীর কড়া নির্দেশ। যার জেরে তৃণমূল নেতাদের পুজোগুলি ‘বাহুল্যবর্জিত’ হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। ফলে দিনভর ঘুরেও তারকা আনানোর বরাত মিলছে না। তারকা তালিকায় চোখ বুলিয়ে প্রায় সব পুজো কমিটিই বলছে, এ বার থাক। আসছে বছর দেখা যাবে।
বহু পুজোর দীর্ঘদিনের তারকা-মধ্যস্থতাকারী তোচন ঘোষ যেমন বলছেন, ‘‘কলকাতার পুজোয় এ বার তো সে রকম টাকাই দেখছি না। অনেক পুজো কমিটির আবার অনেক রকম ব্যাপার রয়েছে। কেউই বাহুল্য কিছু করতে চাইছে না। আমি হাওড়ার একটি পুজোর জন্য সোনাক্ষী এবং দক্ষিণ কলকাতার একটি পুজোর জন্য শিল্পার সঙ্গে কথা বলেছি। সোনাক্ষী ২৫ ও শিল্পা ৩০ লক্ষ নেবেন। এ ছাড়া, রিমি সেন কল্যাণীর একটি পুজোয় যাবেন।’’
উল্টোডাঙার আর এক তারকা-মধ্যস্থতাকারী দিব্যেন্দু বিশ্বাসের দাবি, ‘‘গত বার বাহুবলীর অভিনেত্রীর খুব দর উঠেছিল। এ বার তালিকায় সে রকম কেউই নেই। সলমন খান, সঞ্জয় দত্ত, রণবীর কপূরদের মতো বড় তারকার বাজেট অনেক। ৭০-৮০ লক্ষের কমে তাঁরা আসবেন না। এত টাকা কোনও পুজোই দিতে পারবে না। ফলে ওঁদের নাম এখন আর বলছিই না। কম বাজেটের তারকাদের নাম বললেও সে ভাবে আগ্রহ দেখছি না!’’ দিব্যেন্দুই জানান, কলকাতার পুজোর মধ্যে সুরুচি সঙ্ঘ আর শ্রীভূমি স্পোর্টিংয়েই সব চেয়ে বেশি তারকা এসেছেন। এ বারও সুরুচি বাংলার অভিনেতা-অভিনেত্রীদের দিয়েই কাজ চালিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছে। শ্রীভূমি অবশ্য ঝাঁপিয়েছে বাইরের তারকাদের দিকে।
আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর শ্রীভূমির পুজোর উদ্বোধনে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের বর্তমান ও প্রাক্তন অধিনায়ক মিতালি রাজ এবং ঝুলন গোস্বামীর উপস্থিত থাকার কথা। শ্রীভূমিতেই ২ অক্টোবর আবার যাওয়ার কথা ভারতীয় ব্যাডমিন্টন তারকা পি ভি সিন্ধুর। যদিও ওই ক্লাব সূত্রের খবর, প্রথমে তারা মাধুরী দীক্ষিতের জন্য ঝাঁপিয়েছিল। তবে মাধুরীর জন্য ক্লাবকে ৪০ লক্ষ টাকা খরচ করতে হত। সেই পথে না হেঁটে অর্ধেক টাকায় সিন্ধুকেই বেছেছে তারা। এর মধ্যেই আর একটি সূত্রে চেষ্টা চালানো হচ্ছে আশা ভোঁসলেকে আনার। ক্লাবের সম্পাদক দিব্যেন্দু গোস্বামী অবশ্য বললেন, ‘‘রাজ্যের ক্রীড়া ক্ষেত্রে আমাদের ক্লাবের নামডাক রয়েছে। তাই পুজো উদ্বোধনে ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের আনিয়ে সম্মান জানানোর চেষ্টা করেছি আমরা। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও থাকবেন বলেছেন। এতে ব্র্যান্ডিংটাও হয়ে যায়।’’ শ্রীভূমিরই সদস্য অশোক বণিক বললেন, ‘‘মিঠুনদাকেও আনার চেষ্টা হয়েছিল। তিনি আসতে চাননি। তবে কে কত টাকা নিচ্ছেন, সেটা বাইরে বলা যাবে না।’’
পরিস্থিতি বুঝে এখন তারকা-মধ্যস্থতাকারীরা আবার পুজো উদ্যোক্তাদের তারকা ভাগ করে নেওয়ার ‘প্যাকেজ’ও দিচ্ছেন। এমনই এক তারকা-মধ্যস্থতাকারী অভিজিৎ নস্কর বললেন, ‘‘শক্তি কপূর বা ভাগ্যশ্রীর মতো কাউকে এনে পাঁচ-ছ’টা পুজো কমিটি ঘুরিয়ে দেব। খরচ ওই ছ’টা পুজো কমিটি ভাগ করে দেবে। এ ছাড়া আর উপায় কী?’’