বিকাশ ভবন। —ফাইল চিত্র।
মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে ইন্টারভিউ-বঞ্চিত উচ্চ প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান বিক্ষোভ ৫২২ দিন ধরে চলছে। এ বার সেই চাকরিপ্রার্থীরা আজ, বুধবার থেকে তিন দিনের জন্য বিকাশ ভবনের কাছে সৌরভ অ্যাকাডেমির সামনে সার্ভিস রোডের উপরে ধর্না
অবস্থানে বসছেন। তাঁদের দাবি, গেজেটের নিয়ম মেনে উচ্চ প্রাথমিকের সিট আপডেট করে তাঁদের ইন্টারভিউ নিতে হবে। সেই সঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে যে ভাবে আন্দোলন চলছে, সেটা চলবে। পাশাপাশি, তিন দিন বিকাশ ভবনের কাছেও এই বিক্ষোভ আন্দোলন চালাবেন তাঁরা।
এক দিকে উচ্চ প্রাথমিকের প্রার্থীদের একাংশের কাউন্সেলিং ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। সল্টলেকের করুণাময়ীতে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন ভবনে ইতিমধ্যে তিন হাজার চাকরিপ্রার্থীর কাউন্সেলিং শেষ। দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিং ফের আজ, বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে। দ্বিতীয় দফায় ছ’হাজারের মতো চাকরিপ্রার্থীর কাউন্সেলিং হওয়ার কথা। অন্য দিকে, উচ্চ প্রাথমিকেরই চাকরিপ্রার্থীদের আর একটি অংশ, যাঁরা ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি, তাঁরা ফের বিক্ষোভ আন্দোলন নতুন করে শুরু করছেন। তাঁদেরই এক নেতা আজহার শেখ বলেন, ‘‘উচ্চ প্রাথমিকের ১৪৩৩৯টি শূন্য পদে কাউন্সেলিং শুরু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেটা ২০১৪ সালের শূন্য পদের ভিত্তিতে। ২০১৪ সালের পরে গত ১০ বছরে উচ্চ প্রাথমিকে বহু স্কুলে শূন্য পদ তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেই শূন্য পদগুলি ধর্তব্যের মধ্যে আনা হয়নি। ফলে এখন যে কাউন্সেলিং হচ্ছে, তাতে উচ্চ প্রাথমিকের সমস্ত স্কুলের শূন্য পদ পূরণ হবে না। তা হলে কেন গেজেটের নিয়ম মেনে শূন্য পদ আপডেট না করে এই কাউন্সেলিং শুরু হল?’’
আজহার জানান, কত শূন্য পদ রয়েছে, তা শিক্ষা দফতর স্কুল সার্ভিস কমিশনকে পাঠায়। তাই তাঁরা এ বার বিকাশ ভবনের সামনেই এই বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করছেন। আর এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘সিট আপডেট না করায় আমরা ইন্টারভিউয়ের সুযোগ পেলাম না। আমাদের ১০ বছর নষ্ট হল। চাকরির বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে। এর দায় কে নেবে?’’
উচ্চ প্রাথমিকে শূন্য পদ আপডেট করেই নিয়োগ করা উচিত বলে মনে করছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘‘বহু উচ্চ প্রাথমিক স্কুল আছে, যেখানে হয়তো ২০১৪ সালে দুটো শূন্য পদ ছিল, এখন দশ বছরে আরও পাঁচটি শূন্য পদ তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেগুলিকে ধরা হচ্ছে না। শিক্ষার স্বার্থেই বর্ধিত শূন্য পদে নিয়োগ দরকার।’’
স্কুল সার্ভিস কমিশনের এক কর্তা বলেন, ‘‘উচ্চ প্রাথমিকের ইন্টারভিউ বঞ্চিতেরা মামলা করেছেন। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত যা বলবে, সেই অনুযায়ীই কাজ হবে।’’ তবে এসএসসি-র এক কর্তার কথায়, শূন্য পদ থাকলেও তাতে নিয়োগ হবে কি না, তা নিয়োগকর্তার উপরে নির্ভর করে। অর্থাৎ, এখানে সরকারের উপরে বিষয়টি নির্ভর করছে। যত শূন্য পদ রয়েছে, সব ক’টিতে নিয়োগ করতেই হবে, এমন দাবি করা যায় না বলেই মত ওই কর্তার।