প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত অফিসের সামনে জড়ো হওয়া দু’জন বিজেপি কর্মীকে প্রথমে আটক ও পরে গ্রেফতার করায় শনিবার সকালে উত্তেজনা ছড়াল হাওড়ার জগদীশপুরে। তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের অভিযোগ, বিজেপি-র ওই দুই কর্মী তাঁকে খুন করার জন্য পঞ্চায়েত অফিসের সামনে এসেছিলেন। দলীয় কর্মীরা তা টের পেয়েই তাঁদের তাড়া করেন এবং পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এই ঘটনার পরে ওই দু’জনের মুক্তির দাবিতে প্রথমে জেলাশাসকের বাংলোর সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। পরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশ কমিশনারের অফিসে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের উপরে বেধড়ক লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। বিজেপি-র দাবি, দলের ওই দুই কর্মী ‘গ্রিন হাওড়া, ক্লিন হাওড়া’ প্রকল্পে জগদীশপুর হাইস্কুলের পিছনের মাঠে ঘাস লাগাতে গিয়েছিলেন। মিথ্যা অভিযোগে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ জগদীশপুর পঞ্চায়েত অফিসের সামনে একটি মাঠে জড়ো হন বিজেপি-র ডোমজুড় দু’নম্বর মণ্ডল সভাপতি নীতীশ ঝা, জেলার সাধারণ সম্পাদক বিনয় আগরওয়াল-সহ দলের আরও তিন-চার জন সদস্য। ওই সময়েই পঞ্চায়েত অফিসে আসেন এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান গোবিন্দ হাজরা।
গোবিন্দবাবুর অভিযোগ, মাঠে যাঁরা জড়ো হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে দু’জন সশস্ত্র ব্যক্তিও ছিলেন। তাঁরা তাঁকে দেখতে পেয়েই অস্ত্র হাতে এগিয়ে আসেন। তখনই দলীয় কর্মী ও এলাকার বাসিন্দারা ছুটে গিয়ে ওই দু’জনকে ধরে ফেলেন। নীতীশ ঝা ও অষ্ট নস্কর নামে বিজেপি-র ওই দুই কর্মীকে পুলিশ আটক করার পরেই দলের জেলা সভাপতি সুরজিৎ সাহার নেতৃত্বে জেলাশাসকের বাংলোর সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে রাস্তা অবরোধ করার পরে বিক্ষোভকারীরা পাশের নিত্যধন মুখার্জি রোডে পুলিশ কমিশনারের অফিসের দিকে দৌড়তে শুরু করেন। এই ঘটনায় হতচকিত হয়ে পড়ে পুলিশ। পরে পুলিশের বিশাল বাহিনী গিয়ে বিক্ষোভকারীদের উপরে লাঠি চালাতে শুরু করে। লাঠির আঘাতে কয়েক জন বিক্ষোভকারী জখমও হন।
বিজেপি-র জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে দলের দুই কর্মীকে আটকে রেখেছে পুলিশ। এমনকি, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের উপরে লাঠিও চালিয়েছে। পুলিশের এই ঔদ্ধত্য আমরা মানব না।’’
গোবিন্দবাবুর অভিযোগ, ‘‘যে দু’জন ধরা পড়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই আমাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে। ধরা পড়ে ওঁরা জেলও খেটেছিলেন। এ দিনও দুটো গাড়ি নিয়ে ওঁরা খুন করতে এসেছিলেন।’’ হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ঠিক কী ঘটেছিল, তা খতিয়ে দেখার পরেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’