মা উড়ালপুলে চিনা মাঞ্জা থেকে দুর্ঘটনা রুখতে গত বছরের মার্চ ও জুলাই মাসে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)-র কাছে সেতুটি তারের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ।
ফাইল চিত্র।
মা উড়ালপুলে চিনা মাঞ্জা আটকে কোনও বাইকচালক অথবা আরোহীর আহত হওয়ার খবর গত কয়েক দিনে আসেনি। তা বলে ওই মাঞ্জার বিপদ কিন্তু পিছু ছাড়েনি। ফেন্সিং বা তারের জাল লাগানো অংশে দুর্ঘটনা আটকানো গেলেও সেতুর বাকি অংশে চিনা মাঞ্জার জেরে দুর্ঘটনায় পড়েছেন বেশ কয়েক জন বাইকচালক। উড়ালপুলের উপরে এই ‘যন্ত্রণা’ রুখতে গত জানুয়ারিতে গোটা সেতুই ফেন্সিং দিয়ে ঘেরার প্রস্তাব দেওয়া হয় কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে।
মা উড়ালপুলে চিনা মাঞ্জা থেকে দুর্ঘটনা রুখতে গত বছরের মার্চ ও জুলাই মাসে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)-র কাছে সেতুটি তারের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের দেওয়া প্রস্তাব খতিয়ে দেখে পুজোর আগে, সেপ্টেম্বরের প্রথমে শুরু হয় কাজ। পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথমে সেতুর যে অংশে চিনা মাঞ্জায় বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে তারের জালের ঘেরাটোপ দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়। সেই মতো মা উড়ালপুলের বোট ক্লাব থেকে চার নম্বর সেতু পর্যন্ত অংশে কাজ শুরু হয়। ৯০০ মিটার ওই অংশে সেতুর দু’পাশে তারের জাল দিতে বরাদ্দ করা হয় প্রায় ২০ লক্ষ টাকা।
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, ঘিরে দেওয়ার পরে সেতুর ওই অংশে মাসখানেকের মধ্যে চিনা মাঞ্জা সুতোয় জড়িয়ে বাইক দুর্ঘটনা প্রায় ঘটেনি বললেই চলে। বহু ক্ষেত্রে ঘুড়ির কাটা সুতো উড়ে এলেও তা আটকে গিয়েছে জালে। কিন্তু সেতুর বড় অংশই অরক্ষিত থাকায় সেখানে চিনা মাঞ্জায় পর পর কয়েকটি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন বাইকচালকেরা। এর পরেই গোটা উড়ালপুল তারের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, গত জানুয়ারির ১৮ তারিখ সেতুর রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা কেএমডিএ-কে চিঠি পাঠানো হয়। সেখানে মা উড়ালপুলের পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড় থেকে পরমা আইল্যান্ড পর্যন্ত অংশটির কথা আলাদা ভাবে উল্লেখ করে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করার পাশাপাশি, গোটা উড়ালপুল তারের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও কেটে গিয়েছে দু’মাস। এ বিষয়ে কেএমডিএ-র সেতু বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিক জানালেন, ইতিমধ্যেই কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের প্রস্তাবের বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। পুরো সেতুতে জাল দেওয়া হলে সেতুর কোনও সমস্যা হবে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে। সব দিক খতিয়ে দেখেই রিপোর্ট আকারে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ পুনরায় বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। সব কিছু খতিয়ে দেখে ছাড়পত্র মিললেই দরপত্র ডেকে কাজ শুরু হবে। ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাঁদের মতামত চাওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আরও কিছু নথি চেয়ে পাঠিয়েছেন। সেই নথি পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছি। ’’
তবে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা চাইছি, পুরো সেতুটির দু’পাশেই জাল দিয়ে দেওয়া হোক। সেই মতো প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। জাল লাগানো অংশে চিনা মাঞ্জার দুর্ঘটনা অনেকটাই আটকানো গিয়েছে। বাকি অংশেও জাল দেওয়া হলে দুর্ঘটনা আরও কমবে।’’