Dumping Yard

বর্জ্য পৃথকীকরণের সময়ে ভাগাড়ে ধস, জল জমার আশঙ্কা হাওড়ায়

বেলগাছিয়া ভাগাড় নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনের। হাওড়া শহরের একমাত্র ভাগাড়ে বছরের পর বছর সব আবর্জনা পড়ে সেখানে দু’-তিনটি জঞ্জালের পাহাড় তৈরি হয়েছে।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

হাওড়া শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:২১
Share:

অবরুদ্ধ: ভাগাড়ে ধস নেমে প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে নিকাশি নালা। বুধবার, হাওড়ার বেলগাছিয়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

হাওড়ার বেলগাছিয়া ভাগাড়ে জঞ্জালের পাহাড় কেটে কঠিন বর্জ্য পৃথকীকরণ বা বায়ো মাইনিং-এর কাজ শুরু করেছে কেএমডিএ। আর তা করতে গিয়েই নেমেছে ভয়াবহ ধস। ধসের জেরে অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে হাওড়ার অন্যতম প্রধান নিকাশি নালা। যার ফলে অল্প বৃষ্টিতেই শহরের একটা বড় অংশ বানভাসি হওয়ার আশঙ্কা করছেন হাওড়া পুরসভার কর্তারা। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী নিম্নচাপের জেরে প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কায় সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন তাঁরা।

Advertisement

বেলগাছিয়া ভাগাড় নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনের। হাওড়া শহরের একমাত্র ভাগাড়ে বছরের পর বছর সব আবর্জনা পড়ে সেখানে দু’-তিনটি জঞ্জালের পাহাড় তৈরি হয়েছে। বিপজ্জনক ওই পাহাড় কেটে বায়ো মাইনিং পদ্ধতিতে জঞ্জাল অপসারণের কাজ শুরু করেছিল কেএমডিএ। ওই ভাগাড়ের মধ্যে দিয়েই গিয়েছে একটি ১০ ফুট চওড়া নিকাশি নালা। পুরসভার নিকাশি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নালার মাধ্যমে শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্র ও উত্তর হাওড়া বিধানসভা কেন্দ্রের সমস্ত নর্দমার জল গঙ্গার সঙ্গে সংযুক্ত শহরের অন্যতম বড় নিকাশি খাল, পচাখালে গিয়ে পড়ে। অর্থাৎ, বৃষ্টি হলে শহরের জমা জলের অনেকটাই ওই খাল দিয়ে গঙ্গায় গিয়ে পড়ে। কিন্তু দু’দিন আগে ধসের জেরে ভাগাড়ের নিকাশি নালাটির প্রায় ১০০ ফুট অংশ অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ধস পরিষ্কার করতে না পারলে দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রের নিকাশির জল বেরোতে পারবে না। এর উপরে যদি আবার বৃষ্টি হয়, তা হলে উত্তর হাওড়া, দক্ষিণ হাওড়া এবং মধ্য হাওড়ার অনেক এলাকায় জল জমে যাবে। সেই জল নামতে সপ্তাহ পেরিয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যেই গত সোমবার হওয়া বৃষ্টির জেরে সালকিয়া ও বামনগাছি এলাকায় জমা জল দু’দিন পরেও নামেনি বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই ধসের জেরে আর্বজনা পড়ে নর্দমাটির অনেকটাই বুজে গিয়েছে। মঙ্গলবারই এ নিয়ে নিকাশি দফতরের সঙ্গে বৈঠক করে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নালাটি পরিষ্কার করতে নির্দেশ দিয়েছি। পে লোডার দিয়ে সেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ তিনি জানান, ঠিক হয়েছে, ধস সরিয়ে ফেলার পরে নর্দমাটির এক পাশে শালবল্লা পুঁতে একটি দেওয়াল তৈরি করা হবে, যাতে ফের ধস নামলেও আবর্জনা সরাসরি নর্দমায় গিয়ে না পড়ে।

বুধবার বেলগাছিয়া ভাগাড়ে গিয়ে দেখা গেল, দু’টি বড় পে লোডার ধস পরিষ্কারের কাজ করছে। উপস্থিত রয়েছেন পুরসভার পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার ও আধিকারিকেরা। নর্দমাটির বড় অংশ এখনও আর্বজনা পড়ে বুজে রয়েছে। যে রাস্তা দিয়ে ওই নালার কাছে যাওয়া যায়, সেখানে হাঁটু সমান কাদা। পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ারের বক্তব্য, এই পরিস্থিতির মধ্যেও নালা থেকে আবর্জনা সরানোর কাজ চলছে। তবে এই কাজ সময়সাপেক্ষ। এর মধ্য়ে বৃষ্টি শুরু হলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement