—প্রতীকী চিত্র।
বেহালায় পথ দুর্ঘটনায় স্কুলপড়ুয়ার মৃত্যুর পরে শহরে ট্রাক-সহ বিভিন্ন পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে বিধিনিষেধ জারি করেছে পুলিশ। কিন্তু শহরে পণ্যবাহী গাড়ির ঢোকা-বেরোনোর নির্ধারিত সময় কমে আসায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ট্রাকচালক এবং মালিকদের। অথচ, পুজোর আগে বিভিন্ন পাইকারি বাজারে পণ্যের চাহিদা যেমন বাড়ছে, তেমনই শহরের রাস্তায় যানজটও বাড়ছে। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য আনা-নেওয়ার কাজে সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এমন চলতে থাকলে শহরের পাইকারি বাজারগুলিতে জোগানের সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ট্রাকমালিক সংগঠনগুলি।
এই সমস্যার কথা জানাতে শুক্রবার ‘ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর একটি প্রতিনিধিদল রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর সঙ্গে বৈঠকে বসে। সেখানে রাজ্যের ট্র্যাফিক বিভাগের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল এবং কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের উপ-নগরপাল উপস্থিত ছিলেন। ওই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সজল ঘোষ জানান, অতীতে রাত ১০টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ট্রাক ঢোকার অনুমতি ছিল। এখন সেই সময়সীমা কমিয়ে সকাল ৬টা করে দেওয়া হয়েছে। ফলে, অত সকালে পণ্যবাহী গাড়ি খালি করে শহর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়ছে। সজলের মতে, পোস্তা, মেছুয়া বাজার ছাড়াও কোলে মার্কেটের মতো একাধিক পাইকারি বাজার থেকে বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টের মধ্যে ট্রাক নিয়ে বেরিয়ে আসার সুযোগ ছিল। ওই সব জায়গা থেকে ট্রাকগুলি কিছু ক্ষেত্রে রবীন্দ্র সরণি, টালা সেতু হয়ে নিবেদিতা সেতু দিয়ে শহরের বাইরে চলে যেতে পারত। আর মধ্য কলকাতায় আসা গাড়িগুলির একাংশ ক্যানাল ইস্ট বা ওয়েস্ট রোড ব্যবহার করে বেরিয়ে যেত। কিন্তু নতুন বিধিনিষেধের ফলে তা করা যাচ্ছে না। উপরন্তু বেশির ভাগ বাজারে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখার সুবিধা না থাকায় ট্রাকচালক এবং মালিকদের জরিমানার মুখে পড়তে হচ্ছে। এর ফলে পাইকারি বাজারগুলিতে ফল, আনাজ, মশলা, চাল-সহ নানা পণ্য পৌঁছে দিতে অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। এই সমস্যার আশু সমাধান না হলে পুজোয় বর্ধিত চাহিদার সময়ে বাজারে জোগান ব্যাহত হবে বলেই আশঙ্কা করছে ট্রাকমালিক সংগঠন। এ ছাড়া, রাস্তায় পুলিশ ও পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের মাধ্যমে জরিমানার মুখে পড়তে হচ্ছে বলেও অভিযোগ জানান তাঁরা। খেলা বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থাকলে ডানকুনির বহু আগে থেকেই শহরমুখী ট্রাকগুলিকে প্রায় সারা দিনের জন্য দাঁড় করিয়ে রাখা হয় বলেও জানান তাঁরা।
মন্ত্রী ও ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তারা সব সমস্যা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। মন্ত্রী শহরে যানশাসন, যানজট কমানো ও পথচারীদের সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। সমস্যা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানানো হয়।