পড়ুয়াদের কারও কারও বয়সের জন্য বাংলার শিক্ষা পোর্টালে নাম তোলা যাচ্ছে না। প্রতীকী ছবি।
স্কুলে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভর্তির পরে ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালে পড়ুয়াদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার কাজ চলছে। সেই কাজ করতে গিয়েই সমস্যায় পড়ার কথা জানাচ্ছেন স্কুলশিক্ষকদের একাংশ। কী সেই সমস্যা? তাঁদের দাবি, পড়ুয়াদের কারও কারও বয়সের জন্য বাংলার শিক্ষা পোর্টালে নাম তোলা যাচ্ছে না।
শিক্ষা দফতর আগেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত কোন বয়সে ভর্তি হওয়া যাবে। যেমন, পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির বয়স ১০ বছর বা তার বেশি, তবে ১১ বছরের থেকে কম। আবার ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করতে হলে ১১ বছর বা তার বেশি, কিন্তু ১২ বছরের থেকে কম বয়সি হতে হবে পড়ুয়াকে। সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য পড়ুয়ার বয়স হতে হবে ১২ বছর বা তার বেশি, কিন্তু ১৩ বছরের কম।
শিক্ষা দফতরের উল্লিখিত প্রতিটি শ্রেণিতে ভর্তির এই বয়সের হেরফের হলেই দেখা যাচ্ছে, শিক্ষা পোর্টালে নাম উঠছে না পড়ুয়ার। এতেই সমস্যায় পড়ছেন শিক্ষক এবং অভিভাবকেরা। প্রধান শিক্ষকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, অনেক সময়ে কোনও পড়ুয়া যখন পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হতে আসে, তখন হয়তো তার বয়স এগারোর বেশি। শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী, বেশি বয়সের সেইপড়ুয়াকে ভর্তি না করে ফেরানো যাবে না। ফলে, তাকে ভর্তি নিতেই হবে। অথচ, শিক্ষা দফতরের নিয়ম অনুযায়ী, পড়ুয়াকে ভর্তি নিতে হবে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। এ দিকে, ওই পড়ুয়া পঞ্চম শ্রেণিতেই পড়েনি। তা হলে কী ভাবে সে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়বে? তাই তাকে পঞ্চম শ্রেণিতেই ভর্তি করা হয়। কিন্তু তার নাম শিক্ষা পোর্টালে নথিভুক্ত করতে গেলেই আর উঠছে না।
বেহালা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস বেরা বলেন, ‘‘আমার স্কুলে এ রকম সমস্যা মাঝেমধ্যেই হচ্ছে। বাংলার শিক্ষা পোর্টালে নাম না তুলতে পারলে শিক্ষা দফতর থেকে দেওয়া কোনও সুবিধা ওই পড়ুয়া পাবে না। যেমন, সে স্কুলের পোশাক পাবে না, পাঠ্যপুস্তক পাওয়া নিয়ে সমস্যা হবে।’’ পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা বলছেন, ‘‘আমাদের স্কুলে এ রকম বেশ কিছু পড়ুয়া রয়েছে, যাদের বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বেশি। তাদের নাম শিক্ষা পোর্টালে ওঠাতে সমস্যা হচ্ছে।’’ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তথা শিক্ষক নেতা নবকুমার কর্মকার বলেন, ‘‘এর ফলে আরও একটি সমস্যা তৈরি হচ্ছে। পোর্টালে সব পড়ুয়ার নাম না উঠলে, শিক্ষা দফতরের কাছে পড়ুয়াদের পরিসংখ্যানের প্রকৃত তথ্য থাকবে না।’’
তাই প্রধান শিক্ষকদের একাংশের প্রস্তাব, বয়সের নিম্নসীমা আগের মতো রেখে ঊর্ধ্বসীমা তুলে দেওয়া হোক। এই সমস্যার প্রসঙ্গে শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি জানতে পেরেছি। ওই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’’