জেলের মধ্যে হঠাৎ করে কোনও বৈদ্যুতিন গোলযোগ হলেই সমস্যা। কোনও ইলেকট্রিশিয়ান নেই। হঠাৎ-বিপর্যয়ের মোকাবিলায় কোনও বন্দি ইলেকট্রিকের কাজ জানলে ভাল। না হলে খবর দিতে হবে পূর্ত দফতরকে। তারা লোক পাঠালে তবেই সমস্যার সমাধান হবে। না হলে কী হবে, কেউ জানে না!
কিন্তু এই ভাবে কত দিন! সমস্যার সমাধানে এ বার বন্দিদের মধ্যেই কয়েক জনকে শিখিয়ে-পড়িয়ে নিতে চাইছে কারা দফতর। যাতে অন্তত কেন্দ্রীয় জেলগুলিতে বন্দিদের মধ্যেই একাধিক ইলেকট্রিশিয়ান থাকেন। জেলে কোনও সমস্যা হলে সে ক্ষেত্রে সমাধান করতে পারবেন তাঁরাই।
কারা দফতরের খবর, খুব শীঘ্রই কলকাতার দমদম সেন্ট্রাল জেলে শুরু হতে চলেছে এই পাঠ্যক্রম। দফতরের ডিজি অরুণকুমার গুপ্ত জানিয়েছেন, রাজ্যের সব কেন্দ্রীয় জেল থেকে ৪০ জন বন্দিকে বাছাই করে দমদম জেলে নিয়ে আসা হচ্ছে। তাঁদের ছ’মাস ধরে ৬০০ ঘণ্টার পাঠ্যক্রম পড়ানো হবে।
ঠিক হয়েছে, রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন দফতরের অধীনে টালিগঞ্জ আইটিআই-এর শিক্ষকেরা বন্দিদের প্রশিক্ষণ দেবেন। শনি-রবি এবং সপ্তাহের অন্যান্য দিন কলেজের সময় বাদ দিয়ে প্রশিক্ষণ হবে। শুধু জেলেই নয়, মুক্তি পাওয়ার পরে জেলের বাইরে গিয়েও সংশ্লিষ্ট বন্দিরা যাতে কাজ পেতে পারেন, সে কথা মাথায় রেখেই এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শেখানো হবে, ইলেকট্রিক সার্কিট তৈরি, শর্ট সার্কিট সারাই, আর্থিংয়ের মতো প্রয়োজনীয় সব কাজ।
দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের যে নির্দেশিকা আছে এবং ইলেকট্রিশিয়ান তৈরির যে পাঠ্যক্রম নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে— সেই অনুযায়ীই বন্দিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’’ ওই কর্তার কথায়, ‘‘পেশাদার কোর্স করা থাকলে জেল থেকে মুক্তির পরেও কোনও বন্দির কাজ পেতে অসুবিধা হবে না।’’
কারা দফতরের ডিজি অরুণকুমার গুপ্ত বলেন, ‘‘এই কোর্স আমরা চালিয়ে যাব। প্রথম ৪০ জনের কোর্স সম্পূর্ণ হলে ফের ৪০ জনকে বাছাই করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বর্তমানে জেলগুলিতে রীতিমতো কারখানা তৈরি করে বিভিন্ন জিনিস তৈরি হচ্ছে। কাজেই, উৎপাদন ইউনিট তৈরির জন্য সব কেন্দ্রীয় জেলেই প্রশিক্ষিত ইলেকট্রিশিয়ান প্রয়োজন। সে কথা মাথায় রেখেই ওই পাঠ্যক্রম শুরু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’