চওড়া হবে রাস্তার এই অংশ। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড সম্প্রসারণের জটিলতা অবশেষে কাটল। সব ঠিক থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি কলকাতা পুরসভার হাতে চলে আসার কথা। প্রসঙ্গত, ওই রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি কেনা হবে বলে আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পুরসভা। তা নিয়ে গত দু’বছর ধরে রাস্তা সংলগ্ন জমির মালিকদের সঙ্গে দফায়-দফায় দীর্ঘ আলোচনাও হয়। শেষ পর্যন্ত তার সমাধান হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। কয়েক দিনের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট জমির মালিকদের হাতে চেক তুলে দেওয়া হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, যাদবপুরমুখী প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড সম্প্রসারণের জন্য নস্করপাড়া লেন ও শহিদনগরের মোট চারটি পরিবারের কাছ থেকে ১৭.১১ কাঠা জমি কেনা হচ্ছে। জমির মালিকদের কাঠা পিছু ২০ লক্ষ টাকা দাম দিচ্ছে পুরসভা। ফলে জমির মোট দাম বাবদ ৩ কোটি ৪২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। নভেম্বরে জমির মালিকদের সঙ্গে কথাবার্তা প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছিল বলেই জানাচ্ছেন পুর আধিকারিকদের একাংশ। তার পরে চলতি মাসেই জমির মালিকানা বদলের জন্য দলিল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। পুরসভার এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘জমির মালিকানা সংক্রান্ত দলিল তৈরি হয়ে গিয়েছে। দ্রুতই জমি মালিকদের হাতে টাকা তুলে দেওয়া হবে।’’
প্রসঙ্গত, আগে ওই রাস্তা ছিল কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (কেএমডিএ) অধীনে। তিন বছর আগে ওই রাস্তার দায়িত্ব পুরসভা পায়। রাস্তায় কেন যানজট হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে বছরখানেক আগে কেএমডিএ ও পুরসভার আধিকারিকেরা একটি যৌথ সমীক্ষা করেন। সেই সমীক্ষাতেই ধরা পড়েছিল, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের যেখানে কম-বেশি ১০০ ফুট চওড়া থাকার কথা, সেখানে ৯২ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক জায়গায় ওই রাস্তা মাত্র ৫০-৬০ ফুট চওড়া। বিশেষত শহিদনগরের কাছে যাদবপুরমুখী ওই রাস্তার গা ঘেঁষেই কয়েকটি পরিবার রয়েছে। ফলে রাস্তার ওই অংশে যানজট লেগেই থাকে। শুধু তাই নয়, চিহ্নিত ওই জায়গাগুলি ক্রমশ দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছিল বলেও ধরা পড়েছিল সমীক্ষায়।
এর পরেই সিদ্ধান্ত হয় যে, নস্করপাড়া লেন ও শহিদনগরের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি কিনে নেবে পুরসভা। জমির মালিকদের কাঠা পিছু কত অর্থ দেওয়া হবে, তা ঠিক করার জন্য মেয়র পারিষদ (রাস্তা) রতন দে-সহ পুরসভার শীর্ষ স্থানীয় কর্তাদের নিয়ে একটি বিশেষ ‘প্রাইস কমিটি’ও তৈরি করা হয়। ওই কমিটিই কাঠা পিছু ২০ লক্ষ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে। মেয়র পারিষদ (রাস্তা) রতন দে বলেন, ‘‘রাস্তার মাঝখানে কয়েকটি বাড়ি ছিল। সেগুলিই সরানো হবে। তা নিয়ে আলাপ-আলোচনাও চলছিল অনেক দিন ধরে। শেষ পর্যন্ত জমির মালিকদের হাতে চেক তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’