অভিযোগকারিণী অতসী ভৌমিক। —নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘ দিন ধরেই টাকা বকেয়া ছিল। শোধ করছিলেন না প্রযোজক। সেই টাকা চাইতে গেলে তাঁকে বন্ধ ঘরে কাটারি দিয়ে খুনের হুমকি দিলেন ওই প্রযোজক। মঙ্গলবার এমন অভিযোগই করেছেন টলিপাড়ার একটি জনসংযোগ সংস্থার কর্ণধার। ওই প্রযোজকের বিরুদ্ধে বাঁশদ্রোণী থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন অতসী ভৌমিক নামে এক মহিলা। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, অতসী ভৌমিক টালিগঞ্জে একটি জনসংযোগ সংস্থা (পি আর এজেন্সি) চালান। বিভিন্ন সিনেমার বাণিজ্যিক প্রোমোশনের কাজ করে ওই সংস্থা। বছর সাতেক আগে প্রযোজক রমেশ চাঁদ সিঙ্ঘলের ‘পলাতক’ নামে একটি ছবির প্রোমোশনের বরাত পেয়েছিলেন অতসী। তাঁর অভিযোগ, ২০১২-য় মুক্তি পাওয়া ওই ছবি প্রোমোশনেদর জন্য সাড়ে ১১ লাখ টাকা পাওনা হয়। অতসী বলেন, ‘‘ছবি মুক্তি পাওয়ার পর প্রযোজক প্রায় অর্ধেক টাকা কয়েকটি কিস্তিতে মিটিয়ে দেন। বাকি ৫ লাখ ৭২ হাজার টাকা মেটানোর জন্য আমার কাছে কয়েক দিন সময় চাওয়া হয়।’’ তাঁর দাবি, কারণ হিসেবে প্রযোজক রমেশ চাঁদ সিঙ্ঘল সেই সময় তাঁকে জানিয়েছিলেন, পরিচালক ২৫ লাখের মধ্যে ছবিটি শেষ করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ খরচ হয় ৭০ লাখ। তাই বকেয়া টাকা মেটাতে সময় লাগবে।
অতসীর অভিযোগ, পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে সেই পাওনা টাকা দিচ্ছিলেন না ওই প্রযোজক। অভিযোগে অতসী জানিয়েছেন, প্রযোজক এর পর তাঁর ফোন ধরা বন্ধ করে দেন। শেষ পর্যন্ত গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে রমেশ চাঁদ সিঙ্ঘল কলকাতায় ফিরেছেন জানতে পেরে গত কাল অর্থাৎ সোমবার বেলা ১টা নাগাদ অতসী তাঁর বাড়িতে যান। পুলিশের কাছে করা অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, প্রযোজকের বাঁশদ্রোণীর বাড়িতে গেলে অতসীকে একটি ঘরে ডাকেন রমেশ। সেখানে অন্য এক ব্যক্তিও ছিলেন। অতসীর কথায়, ‘‘সেখানে রমেশ চাঁদ টাকা চাওয়ার জন্য আমাকে প্রথমে গালিগালাজ করা শুরু করেন। আমি প্রতিবাদ করলে ধারালো একটি কাটারি নিয়ে আমাকে প্রাণে মারার হুমকি দেন। ঘরে থাকা অন্য ব্যক্তি আমার ছবি তুলছিলেন সেই সময়।” সোমবার দুপুরেই অতসী বাঁশদ্রোণী থানায় গিয়ে এ বিষয়ে অভিযোগ জানান।
আরও পডু়ন: বিধানসভায় পর্ন দেখা সেই নেতাই এখন কর্নাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী, দলেই প্রশ্নের মুখে ইয়েদুরাপ্পা
আরও পডু়ন: ইজাজকে হেফাজতে নিয়ে এ বার আল কায়দা ঘনিষ্ঠ সালাউদ্দিনকে কব্জায় নিতে চায় এসটিএফ
ডিসি (এসএসডি) সুদীপ সরকার জানিয়েছেন, অতসী ভৌমিকের অভিযোগের ভিত্তিতে রমেশ চাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১ (বলপূর্বক আটকে রাখা), ৩২৩ (মারধর) এবং ৫০৬ (ভয় দেখানো) ধারায় মামলা করা হয়েছে। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘নির্মাণ ব্যবসায়ী রমেশ চাঁদ বাঁশদ্রোণী এলাকার পরিচিত বাসিন্দা। থানার কাছে ব্রহ্মপুরেই তাঁর বাড়ি। ওই এলাকার একটি ক্লাবের সচিবও। ওই মহিলার করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’