ফাইল চিত্র।
কোভিড সেরে গেলেও পরবর্তী সময়ে অনেকেরই নানা রকম উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে সেগুলির কারণে প্রাণসংশয়ও হচ্ছে। সরকারি ব্যবস্থায় সেই সব রোগীর চিকিৎসার জন্য এ বার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও চালু হয়েছে ‘পোস্ট কোভিড ক্লিনিক’।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রথমে বেলেঘাটা আইডি এবং তার পরে এম আর বাঙুর হাসপাতালে চালু হয়েছিল ‘পোস্ট কোভিড ক্লিনিক’। তবে পরবর্তী পর্যায়ে শুধু কোভিড হাসপাতালেই নয়, অন্য হাসপাতালেও যাতে কোভিড-পরবর্তী সমস্যার চিকিৎসা পাওয়া যায়, তারই ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য-অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ধাপে ধাপে সমস্ত হাসপাতালেই পোস্ট কোভিড ক্লিনিক চালুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’
এ রাজ্যের মতো কেরল সরকারও সেখানকার প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে শুরু করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘পোস্ট কোভিড ক্লিনিক’ চালুর পরিকল্পনা করেছে। কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা প্রত্যেক রোগীর সেই ক্লিনিকে যাওয়াটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শিশুর দুগ্ধপানের আলাদা ঘরের ভাবনা ইকো পার্কে
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল ও বুধবার সেখানে চলছে ওই ক্লিনিক। মাসখানেক আগে প্রথমে শুধু বুধবার ওই ক্লিনিক চললেও রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী এখন বাড়ানো হয়েছে আরও একটি দিন। কর্তৃপক্ষ জানান, প্রতি সপ্তাহের ওই দু’দিনে ৬০-৭০ জন করে রোগী চিকিৎসা করাতে আসছেন। হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘কোভিড থেকে মুক্তি পাওয়াটা তাৎক্ষণিক। সকলের না হলেও অনেকেরই করোনা থেকে সেরে ওঠার পরে অন্য উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। তাই তাঁরা এই ক্লিনিকে এসে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিচ্ছেন ও প্রয়োজনীয় পরীক্ষাও করা হচ্ছে।’’
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরেও শরীর থেকে অধিক মাত্রায় সাইটোক্রাইন বেরিয়ে যাওয়ার ফলে অনেকের সমস্যা থেকে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফুসফুস। হার্টেও সমস্যা দেখা দিচ্ছে। প্রচণ্ড দুর্বলতা থাকছে, অল্প কাজকর্ম করলেই হাঁফ ধরে যাচ্ছে। আবার গা-হাত-পা ব্যথার সঙ্গে থাকছে শ্বাসকষ্টও। এ সবের পাশাপাশি কারও কারও দেখা দিচ্ছে মানসিক অবসাদ। কোভিডকে জয় করলেও ভয়, আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলেন, ‘‘করোনা-পরবর্তী এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত চিকিৎসার মধ্যে থাকা প্রয়োজন। মানসিক সমস্যার কাউন্সেলিং দরকার। না হলে কোভিড থেকে সেরে উঠেও অন্য বিপদ ঘটতে পারে।’’
আরও পড়ুন: মায়ের বকুনি সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী বারুইপুরের কিশোরী!
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের ওই ক্লিনিকে মেডিসিন, স্নায়ুরোগ, হৃদ্রোগ, বক্ষরোগ ও মনোরোগের চিকিৎসকেরা থাকছেন। রাজ্যের ওই তিন সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও বেসরকারি হাসপাতালেও চালু হয়েছে ‘পোস্ট কোভিড ক্লিনিক’।