প্রতীকী ছবি
এমনিতেই লোকবল কম। অভিযোগ, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কর্মীদের একাংশের কাজ না সেরে দ্রুত বাড়ি চলে যাওয়ার প্রবণতা। তার জেরে শহরের বেশ কিছু জায়গায় জঞ্জাল পড়ে থাকছে। ঘটনা কানে আসতেই বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কলকাতা পুরসভার জঞ্জাল দফতরকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন কাজ না করে বাড়ি চলে যাওয়া কর্মীদের চিহ্নিত করতে। এবং একই সঙ্গে ইদ মিটলে তিনি নিজেই সন্ধ্যার পরে এলাকায় ঘুরে জঞ্জাল সাফাই হয়েছে কি না তা সরেজমিন দেখবেন বলেও জানান মেয়র ফিরহাদ।
নিয়ম মতো দিনে দু’বার জঞ্জাল সাফাই করার কথা পুরসভার। জঞ্জাল দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, দৈনিক সাড়ে ৪ হাজার মেট্রিক টন জঞ্জাল জমে কলকাতার রাস্তায়। বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স-সহ বহুতল, ঘরবাড়ি, ঝুপড়ির সংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শহরের লোকসংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে। সেই অনুযায়ী জঞ্জাল তোলার লোকবল বাড়ছে না। দিনের বেলা দুপুর ২টো পর্যন্ত সাফাইয়ের কাজ চলে। পরে আবার রাত ৮টা পর্যন্ত সাফাইয়ের কাজ হওয়ার কথা। কিন্তু বেশ কয়েক জন সুপারভাইজার বাড়ি চলে যাওয়ায় কাজ দেখার কেউ থাকছে না। পুরসভার এক অফিসার জানান, বছর খানেক হল প্রায় দেড়শো জন সুপারভাইজার নিয়োগ করা হয়েছে। তার প্রায় ৫০ শতাংশ নদিয়া-সহ অন্যান্য জায়গা থেকে যাতায়াত করেন। বিকেলের পরেই তাঁরা বাড়ি চলে যান। তাতে কাজে
ঢিলেমি বাড়ছে।
পুরসভা সূত্রে খবর, এক শ্রেণির কর্মী-অফিসার সন্ধ্যার আগেই বাড়ি চলে যাওয়ায় কিছু কিছু এলাকায় ব্যাহত হচ্ছে সেই কাজ। তাতে ওই সব এলাকায় জঞ্জাল পড়ে থাকছে। দফতর সূত্রে খবর, হিসেব মতো রাতে পুরো কাজ করতে হলে দিনে যা লোক লাগে তার ৬৫ শতাংশ কর্মী রাতে থাকা প্রয়োজন। কিন্তু দিনের দ্বিতীয় পর্যায়ে পুরো শহরে কাজ করার মতো লোকই নেই। তার উপরে এক শ্রেণির ১০০ দিনের কর্মী রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকায় কাজে ফাঁকিও দিয়ে থাকেন বলেও অভিযোগ। তাতে সাফাইয়ের কাজেও গাফিলতি থাকে।
মঙ্গলবার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘আমি জানতাম না। শুনলাম, কয়েক জন সুপারভাইজার বিকেলের সাফাইয়ের কাজের তদারকি না করেই বাড়ি চলে যান। জঞ্জাল দফতরকে বলা হয়েছে, সন্ধ্যের পর এলাকায় লোক পাঠাতে। কারা কাজ না করে চলে যাচ্ছে তাঁদের চিহ্নিত করতে হবে।’’
পানীয় জল সরবরাহ এবং জঞ্জাল অপসারণ—পুর পরিষেবার প্রধান কাজ। সেই কাজে গাফিলতি হলেই শহরবাসী ক্ষুব্ধ হন। তার উপর সামনের বছর পুরভোট। পুরসভা সূত্রে খবর, বিজেপির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে এমনিতেই চিন্তায় পুরবোর্ড। ফলে পুরভোটের আগে শহরের ভোটারদের মন রাখতে তৎপর মেয়র নিজেও।