জ়াকারিয়া স্ট্রিট।
পাশেই প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ-সহ বাংলা তথা ভারতের সারস্বত সাধনার ঐতিহাসিক অঙ্গন। তবু সেই চেনা তল্লাট থেকে দু’পা বাড়িয়ে অনেকেরই দেখা হয় না কত কিছু!
রবিবার সকালে পড়শিকে জানার তাগিদে জ়াকারিয়া স্ট্রিট-অভিযান কারও কারও জীবনে সেই অভাব ভরাট করে গেল। প্রধানত প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রদের একটি দল শামিল হয়েছিলেন এই সফরে। গন্তব্য মোটামুটি কলুটোলা স্ট্রিট, ফিয়ার্স লেন, জ়াকারিয়া স্ট্রিট, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ এবং রবীন্দ্র সরণির (চিৎপুর রোড) মধ্যবর্তী পরিসর। উনিশ শতকের কলকাতার জাঁদরেল আইনজীবী বলাইচাঁদ দত্তের বাড়ি, শ্রীরামকৃষ্ণের পদধূলি ধন্য ভক্তগৃহের পাশেই এ পাড়ায় রয়েছে নাখোদা মসজিদ বা উনিশ শতকের চোখ জুড়োন গোলকুঠি ও বাগওয়ালি কোঠি ইমামবাড়া। দেড় শতক পিছনের সালেহজি মুসাফিরখানাও একুশ শতকীয় শহরে আতিথেয়তা ও গ্রহিষ্ণু মনের পরম্পরা বহন করছে।
প্রধানত মুসলিম অধ্যুষিত পাড়া বলে পরিচিত হলেও শহরের সম্প্রীতিময় জীবন ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের আখ্যানই ফুটে ওছে এ তল্লাটে। এই পাড়াতেই অভিজাত সুতা কাবাব, বোটি কাবাবেরও আঁতুড়ঘর। এ দিন চিৎপুর রোডে সুরমা-আতরের সাবেক দোকানে অল্প ক্ষণ সময় কাটালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। শতাব্দীপ্রাচীন মিষ্টি বিপণি হাজি আলাউদ্দিনে ঢুকে রকমারি হালুয়ার স্বাদে বিভোর হল এ
কালের প্রজন্ম।
এ শহরে সাধারণত খোপ-কাটা গন্ডিতেই বসবাস করে বিভিন্ন গোষ্ঠীর নাগরিকেরা। এই দেওয়াল ভাঙতে উদ্যোগী ‘নো ইয়র নেবার’ বলে পড়শিকে জানার একটি মঞ্চ। উড়ালপুল, শপিং মল-ময় একুশ শতকের গর্ভেও যে একটা প্রাচীনতর কলকাতা সেঁধিয়ে আছে, তরুণদের সামনে সেটাই মেলে ধরা হল রবিবাসরীয় অবকাশে।