কলকাতা পুরসভা— ফাইল চিত্র।
রাজ্যে শেষ দফা ভোটের আগে হঠাৎ করেই আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছিলেন তিনি। তাঁকে নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়েছিল দুই রাজনৈতিক দলে। তাঁর মূর্তি ভাঙায় শহর ছেয়েছিল ‘ছিঃ’ লেখা পোস্টারে। ভোট মিটতেও তিনি রয়েছেন আলোচনার কেন্দ্রেই। এ বার তাঁর নামেই নতুন পার্কের নামকরণের প্রস্তাব আসতে শুরু করেছে পুরসভায়। সেই প্রস্তাব দিচ্ছে প্রায় সবক’টি রাজনৈতিক দল।
কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক জানান, ১৪ মে মূর্তি ভাঙার পর থেকে নবনির্মিত পার্কগুলি বিদ্যাসাগরের নামে করতে পুর কর্তৃপক্ষকে লিখিত এবং মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন একাধিক কাউন্সিলর। যদিও এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি কর্তৃপক্ষ। পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘নতুন পার্কে বিদ্যাসাগরের নাম রাখতে চেয়ে পুরসভায় আবেদন জানিয়েছেন অনেক কাউন্সিলর। তবে সে সব বিবেচনা করবে পুরসভা।’’ দেবাশিসবাবু জানান, কলেজ স্কোয়ারে বিদ্যাসাগরের মূর্তি অনেক দিনই রয়েছে। উদ্যানের নামকরণও হয়েছে বিদ্যাসাগরের নামেই। পুরসভার তথ্য বলছে, উত্তরের সুকিয়া স্ট্রিটেও বিদ্যাসাগরের নামে উদ্যান রয়েছে। আরও কিছু পার্ক বা উদ্যান এই নামে থাকতে পারে বলেও তিনি জানান।
পুরসভা সূত্রের খবর, কোনও পার্ক মনীষীর নামে করতে হলে স্থানীয়দের মতামতও বিবেচিত হয়। সেই কারণে সংশ্লিষ্ট বরো থেকে নামকরণের অনুমতি পত্র আনতে হয়। তার পরেই উদ্যান দফতর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। পুরসভার ১০ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত জানান, ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত অরবিন্দ নগর এবং গল্ফগ্রিনের সংযোগস্থলে একটি পুরনো পার্ক সাজানোর প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের মত নিয়ে ওই পার্কের নাম বিদ্যাসাগরের নামে করার কথা ভাবা হয়েছে। একই মত ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তের। টালা পার্কে যে স্টেডিয়াম হচ্ছে, তা বিদ্যাসাগরের নামে করতে চেয়ে পুরসভা ও রাজ্য ক্রীড়া দফতরকে জানানো হবে, বলে জানিয়েছেন এক নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহা।
পিছিয়ে নেই বিজেপি। ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সুব্রত ঘোষ ইতিমধ্যেই সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের বুলেভার্ড বিদ্যাসাগরের নামে করার দাবি জানিয়েছেন। পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়ও জানাচ্ছেন, নতুন পার্ক বিদ্যাসাগরের নামে করতেই তাঁরা উৎসাহী। স্থানাভাবে পার্ক তৈরিতে উদ্যোগী না হলেও এমন প্রস্তাবে আপত্তি নেই পুরসভার ১১১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর চয়ন ভট্টাচার্যের। তবে এলাকাবাসীর পছন্দ-অপছন্দই শেষ কথা বলবে।