প্রতীকী ছবি।
এক কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ডাকাতির ঘটনায় ধৃত পুলিশকর্মী দেবাশিস দাস-সহ অভিযুক্তদের ভিডিয়োগ্রাফি-ফোটোগ্রাফি (গেট প্যাটার্ন) পরীক্ষা করাতে চায় পুলিশ। এ বিষয়ে সোমবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে আবেদন করা হয় পুলিশের তরফে। আদালত দেবাশিসের পরীক্ষার বিষয়টি এ দিন মঞ্জুর করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে গত ৯ জুন বিকেলে তালতলা থানা এলাকার লেনিন সরণির মৌলালি মোড়ের কাছ থেকে এক ব্যবসায়ী ও তাঁর সঙ্গীকে তুলে নিয়ে যায় দশ জন লোক। তারা দু’টি গাড়িতে চড়ে এসেছিল। ওই দু’জনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় সল্টলেকের করুণাময়ীতে। সেখানে ওই দুষ্কৃতীরা অভিযোগকারী ব্যবসায়ীর কাছে থাকা এক কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তাঁদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। এর পরে অভিযুক্তেরা (যার মধ্যে দেবাশিস-সহ চার জন পুলিশকর্মী ছিল) একটি হোটেলে ঢোকে। সেখানে টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা করে তারা বেরিয়ে যায়। যা সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে।
ভিডিয়োগ্রাফি-ফোটোগ্রাফি (গেট প্যাটার্ন) পরীক্ষা কী?
পুলিশের এক কর্তা জানান, ধৃত অভিযুক্তদেরই যে ওই সিসি ক্যামেরায় দেখা গিয়েছিল, সে ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে তাদের ভিডিয়োগ্রাফি-ফোটোগ্রাফি করা হবে। অর্থাৎ, তাদের হাঁটাচলা, কথা বলার ধরন— সব কিছু রেকর্ড করা হবে। এর পরে তা পাঠানো হবে ফরেন্সিক ল্যাবে। সেখানে সিসিটিভি ফুটেজের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে ওই ভিডিয়ো এবং ছবি।
পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমান বিচার ব্যবস্থায় এই ভিডিয়োগ্রাফি-ফোটোগ্রাফি বৈদ্যুতিন প্রমাণ হিসাবে গ্রাহ্য হচ্ছে। তাই লালবাজারের তরফে বেশ কয়েকটি অপরাধের তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া ব্যক্তিই যে গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। ফরেন্সিক পরীক্ষায় দু’জন একই ব্যক্তি বলে প্রমাণিত হলে বিচারপর্ব চলাকালীন অভিযুক্তের পক্ষে অভিযোগ অস্বীকার করা কঠিন বলেই দাবি পুলিশের একাংশের।
এ দিকে, এই ঘটনায় ধৃত কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল দেবাশিস দাসকে সোমবার পুলিশি হেফাজত থেকেএনে আদালতে তোলা হয়েছিল। সেখানে সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী তার জামিনের বিরোধিতা করেন। পরে বিচারক তাকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশি সূত্রের খবর, ঘটনার পরে অভিযুক্তেরা টাকার ভাগাভাগি করতে নিউ টাউনের একটি হোটেলে গিয়েছিল। ধৃত দেবাশিসের ভাগে পড়ে দু’লক্ষ টাকা। যার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে তার সল্টলেকের বাসভবন থেকে। ডাকাতির ওই ঘটনায় দেবাশিস-সহ চার পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ধরা পড়েছে মোট ন’জন।