ফাইল চিত্র।
রানিকুঠির জি ডি বিড়লা সেন্টার ফর এডুকেশনে চার বছরের ছাত্রীর যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠার পরে শহরের স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে উদ্যোগী হল কলকাতা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন থানা নিজেদের এলাকার সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলিতে সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে সুপারিশ করেছে। পাশাপাশি, স্কুলগাড়ি ও স্কুলবাস যাতে নিরাপদ হয়, তার জন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে থানার তরফে। স্কুলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে মঙ্গলবার লালবাজারে শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনারেরা। পুলিশের একাংশের দাবি, সেখানে শহরের স্কুলগুলির নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘স্থানীয় থানাই প্রাথমিক ভাবে সুরক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন সুপারিশ করেছে স্কুলগুলির কাছে। প্রয়োজনে ফের তাদের ডেকে কথা বলা হবে।’’
এর আগে রাজ্যের স্কুলগুলিতে শিশুদের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে উদ্যোগী হয়েছিল রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। জি ডি বিড়লার ঘটনার পরে অবশ্য শহরের অনেক স্কুল নিজেরাই এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে।
পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, জি ডি বিড়লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাস্তা অবরোধ, বিক্ষোভ, অভিভাবকদের উপরে পুলিশের লাঠিচার্জের মতো ঘটনার সাক্ষী থেকেছে কলকাতা। সে কথা মাথায় রেখেই পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করে পুলিশ।
লালবাজার সূত্রের খবর, পুলিশের তরফে বিভিন্ন স্কুলের ভিতরে এবং বাইরে সিসি ক্যামেরা লাগানোর উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। যে সব স্কুলে সিসি ক্যামেরা রয়েছে, সেখানে সেগুলি ঠিক মতো কাজ করছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। স্কুলের নিজস্ব বাসেও যাতে ক্যামেরা বসানো হয়, তারও অনুরোধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে স্কুলবাস ও স্কুলগাড়িতে এক জন করে মহিলা অ্যাটেন্ড্যান্ট রাখারও আর্জি জানিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া, স্কুলের সব কর্মীর যাতে পরিচয়পত্র থাকে, তা-ও সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। স্কুলে কাজ করতে আসা ঠিকা শ্রমিকদেরও স্কুলের তরফে পরিচয়পত্র দিতে বলেছে পুলিশ। কো-এড স্কুলগুলিতে ছাত্র-ছাত্রীদের শৌচাগারও পৃথক করতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের একাংশের দাবি, বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের তরফে পুলিশকে বলা হয়েছে, পরিচালন সমিতির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকের পরেই তারা পরবর্তী পদক্ষেপ করবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, তাদের আবেদনে বেসরকারি স্কুলগুলির তরফে ইতিবাচক সাড়া মিললেও বেশ কয়েকটি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল জানিয়েছে, পুলিশের কথা মতো সুরক্ষার সব রকম ব্যবস্থা করতে গেলে যে আর্থিক সঙ্গতির প্রয়োজন, তা তাদের নেই।