Khidderpore

আত্মঘাতী হন অগ্নিদগ্ধ সেই বৃদ্ধা, ধারণা পুলিশের

বৃহস্পতিবার সকালে একটি কারখানার পরিত্যক্ত জমিতে ওই বৃদ্ধার অগ্নিদগ্ধ দেহ পড়ে থাকা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:০১
Share:

—প্রতীকী ছবি

খিদিরপুরের গোপাল ডাক্তার রোডে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকা সেই বৃদ্ধা আত্মঘাতী হয়েছেন বলেই মনে করছে পুলিশ। মৃতার পরিবারের খোঁজ পাওয়ার পরে শুক্রবার এ কথাই জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। স্থানীয় ওয়াটগঞ্জ থানার এক তদন্তকারী আধিকারিক এ দিন বলেন, “ফরেন্সিক বিভাগ ঘটনাস্থলে গিয়ে সব দিক খতিয়ে দেখে জানিয়েছে, এটি আত্মহত্যা। ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টও সে কথাই বলছে। মৃতার মেয়ের বয়ানও আত্মহত্যার দিকেই ইঙ্গিত করছে।” যদিও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কাউকে পায়নি পুলিশ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে একটি কারখানার পরিত্যক্ত জমিতে ওই বৃদ্ধার অগ্নিদগ্ধ দেহ পড়ে থাকা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। এলাকাটি পুরসভার ৭৬ নম্বর ওয়ার্ডে। ঘটনাস্থলের কাছেই পুরসভার কম্প্যাক্টর, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমের কার্যালয়। বেলা সওয়া ১১টা নাগাদ পোড়া গন্ধ পান পুরকর্মীরা। তাঁরা গিয়ে অগ্নিদগ্ধ ওই বৃদ্ধার দেহ দেখেন। পুলিশ জানায়, ওই রকম ঘন বসতিপূর্ণ এলাকা হলেও বৃদ্ধাকে কেউই কারখানার জমিতে ঢুকতে বা গায়ে আগুন দিতে দেখেননি।

তদন্তে নেমে সংলগ্ন সব ক’টি থানায় জমা পড়া নিখোঁজ ডায়েরি খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ। যদিও তা থেকে কোনও সূত্র মেলেনি। এর পরে স্থানীয় ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর ষষ্ঠী দাস জানতে পারেন, মৃতা গোপাল ডাক্তার রোডেরই বাসিন্দা। নাম অণিমা দাস (৭২)। ১০/১ নম্বর বাড়িতে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গেই থাকতেন তিনি। ষষ্ঠীবাবুই যোগাযোগ করেন মৃতার একমাত্র মেয়ে শিপ্রা ঢালুইয়ের সঙ্গে। বালিগঞ্জের পেয়ারাবাগান বস্তির শ্বশুরবাড়ি থেকে গিয়ে তিনিই রাতে মায়ের দেহ শনাক্ত করেন। পুলিশকে শিপ্রা জানিয়েছেন, মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় কাউকেই তিনি সন্দেহ করেন না। তাঁর মা সম্ভবত আত্মঘাতীই হয়েছেন।

Advertisement

শিপ্রা জানান, তিনি যখন ছোট, তখনই বাবা সাধন দাস মারা যান। তাঁকে নিয়ে অণিমাদেবী শ্বশুরবাড়িতেই দেওর ও ভাশুরদের পরিবারের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। বিয়ের পরে শিপ্রা শ্বশুরবাড়িতে চলে গেলেও তাঁর মায়ের সমস্যা হয়নি। তাঁর কথায়, “দিন কয়েক আগে মায়ের ডায়রিয়া মতো হয়েছিল। কাকুর পরিবারই তো দেখেছে। মায়ের কিছু মানসিক সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। তাই হয়তো এ ভাবে গায়ে আগুন দিয়েছে।”

পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। যে হেতু কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি, তাই এখন ধারার পরিবর্তন হচ্ছে না। ফরেন্সিক বিভাগের বক্তব্য, ওই বৃদ্ধার গায়ে অন্য কেউ আগুন ধরিয়ে থাকলে ধস্তাধস্তির যে চিহ্ন থাকার কথা, তা মেলেনি। আগুনের শিখার জেরে তৈরি হওয়া কালো দাগও দূর পর্যন্ত যায়নি। ফলে মহিলা যে একেবারেই ছোটাছুটি করেননি, সেটা স্পষ্ট। খুনের ঘটনা হলে এর উল্টোটাই ঘটত। পুলিশ মৃতার শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি ময়না-তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টের অপেক্ষা করছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement