আত্মঘাতীই হন স্বর্ণ ব্যবসায়ী, ধারণা পুলিশের

শুক্রবার ঘটনার পরে দোকানের ভল্টে লুট ও সিসিটিভি-র তথ্য লোপাট হয়ে গিয়েছিল বলে ধারণা হয়েছিল পুলিশের। কিন্তু কয়েক দফায় ওই দোকানে তল্লাশির পরে লুটের কোনও জোরাল প্রমাণ হাতে আসেনি বলে দাবি পুলিশের। ওই দোকানে একাধিক ভল্ট রয়েছে। ওই ভল্টগুলি থেকে সোনার গয়না মিলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০২:৫৭
Share:

উজ্জ্বল জয়ধর

নরেন্দ্রপুরের কালীবাজারের লেক গার্ডেন্সে নিজের দোকান থেকে স্বর্ণ ব্যবসায়ী উজ্জ্বল জয়ধরের (৪১) দেহ উদ্ধারের ঘটনায় আত্মহত্যার ছায়াই দেখছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

শুক্রবার ঘটনার পরে দোকানের ভল্টে লুট ও সিসিটিভি-র তথ্য লোপাট হয়ে গিয়েছিল বলে ধারণা হয়েছিল পুলিশের। কিন্তু কয়েক দফায় ওই দোকানে তল্লাশির পরে লুটের কোনও জোরাল প্রমাণ হাতে আসেনি বলে দাবি পুলিশের। ওই দোকানে একাধিক ভল্ট রয়েছে। ওই ভল্টগুলি থেকে সোনার গয়না মিলেছে। এমনকি, একটি ভল্টের উপর থেকে নগদ টাকা ভর্তি একটি প্লাস্টিকের জারও পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। ওই দিন তাঁর কর্মচারী দোকানে ছিলেন না। তাঁকে উজ্জ্বল নিজেই ছুটি দিয়েছিলেন। এক তদন্তকারীর কথায়, একের পর এক তথ্য সাজানো হচ্ছে। তা থেকেই আত্মহত্যার দিকটি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে। উজ্জ্বলের পরিজন ও কিছু ব্যবসায়ী বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বাজারে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ধার হয়ে গিয়েছিল উজ্জ্বলের। তেমনই কয়েক জনের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা পাওনাও ছিল তাঁর। লেনদেনের ফাঁসেই তিনি ডুবে গিয়েছিলেন বলে ধারণা তদন্তকারীদের। সম্প্রতি তিনি জীবনবিমার একটি পলিসি করেছিলেন। কোনও ভাবে মৃত্যু হলেই প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা জীবনবিমার থেকে পাওয়ার কথা। তদন্তকারীদের বক্তব্য, দোকানের শাটারের ভিতরে একটি কোল্যাপসিব্‌ল গেট আছে। তাতে তালা দেওয়া ছিল। পরে ওই তালার চাবি একটি ভল্টের উপর থেকে মিলেছে। বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়ে স্ত্রী রুমাকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘একটি বড় ‘পেমেন্ট’ পাওয়া যাবে। তাতে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। ওই জীবনবিমার পলিসির শর্ত অনুযায়ী, তিন দিন হয়ে গেলেই কোনও ব্যক্তির মৃত্যুতে ২৫ লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে। তদন্তকারীদের ধারণা, বড় ‘পেমেন্ট’ বলতে বিমার টাকা দিকেই ইঙ্গিত ছিল উজ্জ্বলের। তিনি মারা গেলে ওই টাকা তাঁর স্ত্রীই পাবেন।

তদন্তকারীদের আরও বক্তব্য, ভল্ট লুট হয়নি। এমনকি, সিসিটিভির ‘হার্ড ডিস্ক’ও খোয়া যায়নি। হার্ড ডিস্ক’টি টি খুলে রাখা হয়েছিল। সেটি দোকানের এক পাশ থেকে পরে উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের অনুমান, আত্মহত্যার বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ভিতর থেকে কোল্যাপসিব্‌ল গেটে তালা দিয়েছিলেন উজ্জ্বল। সিসি টিভিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সে কারণেই। পরিকল্পনা করেই উজ্জ্বল আত্মহত্যা করেছেন বলে অনুমান পুলিশের। বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খান বলেন, ‘‘আত্মহত্যার বিষয়টিই স্পষ্ট হচ্ছে। আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’ পুলিশ সুপারের কথায়, ‘‘ওই এলাকাটি খুবই জমজমাট। দুপুরে কোনও লুট হলে আশপাশের লোকজন শুনতে পেতেন। কিন্তু তেমনটা হয়নি।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement