ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুলিশ এলাকার থানার সব কাজকর্ম ক্যামেরাবন্দি হতে চলেছে। এমনকি থানায় অভিযোগ জানাতে আসা ব্যক্তি কিংবা অভিযুক্তের সঙ্গে অফিসার কী কথা বলছেন, তাও রেকর্ডিং হয়ে যাবে। সৌজন্যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ।
লালবাজার সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে ঘিরে ফেলা হচ্ছে থানা-বাড়িকে। প্রথম দফায় ২৪টি থানায় ৯১৬টি সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। পাটুলি, যাদবপুরের মতো কিছু থানায় ইতিমধ্যেই ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রথম দফার বাকি থানায় চলতি মাসের মধ্যে ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হবে। কলকাতা পুলিশের বাকি থানা দু’দফায় সিসি ক্যামেরার নজরদারির অধীনে আনা হবে। ওই কাজ চলতি বছরে শেষ হওয়ার কথা।
বর্তমানে কলকাতা পুলিশের থানাগুলিতে তিনটি করে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সেরেস্তা, লক-আপ ও থানায় ঢোকার মুখে সেগুলি রয়েছে। ওসির ঘর থেকে ওই সব ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালানো হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নতুন করে থানায় ঢোকা ও বেরোনোর পথে, মূল গেটে, চত্বরের সামনে, প্রতিটি লক-আপের ভিতরে ও বাইরে, লবিতে, করিডরে, রিসেপশনে, বারান্দায়, ইনস্পেক্টর বা ওসিদের ঘরে, সাব-ইনস্পেক্টর ও অফিসারের ঘরে, ডিউটি অফিসারের ঘরে, শৌচাগারের বাইরে, অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের ঘরে ও থানার পিছনে সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে।
এক পুলিশকর্তা জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে, থানা-বাড়ির ১৪টি জায়গায় ক্যামেরা বসাতেই হবে। এর পরেও যে সব জায়গা নজরদারির বাইরে থাকছে, সেখানেও সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে। সেই মতো থানার কোথায় কোথায় সিসি ক্যামেরা প্রয়োজন, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল সংশ্লিষ্ট থানার ওসিদের কাছে। সেই তালিকা অনুযায়ী কাজ হবে। যাদবপুর থানায় ৪০টিরও বেশি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে।
লালবাজার সূত্রের খবর, এখন যে ক্যামেরা থানায় আছে, তাতে শুধুই ছবি রেকর্ড হয়। কিন্তু নতুন বসানো ক্যামেরায় থাকছে নাইট ভিশন। অর্থাৎ, রাতের ছবি স্পষ্ট ভাবে ধরা পড়বে ক্যামেরায়। সেই সঙ্গে থানার ভিতরের সব কথোপোকথন রেকর্ডিং হবে। ক্যামেরার ওই অডিয়ো এবং ভিডিয়ো ছ’মাস পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকবে। যাতে প্রয়োজনে সব খতিয়ে দেখা যায়। অডিয়ো এবং ভিডিয়োর তথ্য সংরক্ষণের দায়িত্ব থানার ওসিদের হাতেই থাকছে। পাশাপাশি থানা থেকেই ক্যামেরার উপরে নজরদারি চলবে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘আপাতত লালবাজার কন্ট্রোল রুম থেকে ওই ভিডিয়ো দেখা যাবে না। তবে ভবিষ্যতে যাতে সব সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় ভাবে করা যায়, তার ব্যবস্থাও করা হবে।’’