গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে যৌন হেনস্থার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করে দিয়েছে কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আট জনের তদন্তকারী ওই দলের তরফে রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ চাওয়া হয়েছে বলে খবর। পুলিশের একটি সূত্রে খবর, রাজভবনের ওসির কাছে এ নিয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে শুক্রবার। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে রাজভবনের বিভিন্ন কর্মীদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলারও পরিকল্পনা রয়েছে তদন্তকারীদের। অন্য দিকে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির অভিযোগকে ‘স্ক্রিপ্টেড’ বলে বর্ণনা করলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভার কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই অভিযোগের বিষয়টি পূর্বপরিকল্পিত। বস্তুত, লোকসভা ভোটের মুখে এই পুরো বিষয়টি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল শুরু হয়েছে।
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছেন রাজভবনেরই এক অস্থায়ী কর্মী। এ নিয়ে তিনি বৃহস্পতিবার হেয়ার স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। শুরু হয় শোরগোল। এ নিয়ে নির্বাচনী সভা থেকে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘একটা মেয়ে রাজভবনে চাকরি করত। তার সঙ্গে কী ব্যবহার করেছেন মাননীয় রাজ্যপাল?’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘আমার কাছে একটা নয়, হাজারটা ঘটনা (অভিযোগ) আসছে। কিন্তু কালকের মেয়েটির কান্নায় আমার বুক ফেটে গিয়েছে।’’ পাশাপাশি, এ নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘‘সেখানেই (রাজভবনে) তো কাল রাতে থেকে এলেন। কিছু তো বললেন না?’’ এর মধ্যে তদন্তকারী দল শুক্রবার রাজভবনে গিয়ে সেখানে কর্মরত কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে এসেছে। আর শনিবার নিউ টাউনের ইকো পার্কে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে এই ইস্যুতে তৃণমূলকেই একহাত নিয়েছেন দিলীপ। বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘পুরো স্ক্রিপ্ট তৈরি ছিল। ওরা একাই চেঁচাচ্ছে। সবাই জানে এর পিছনে কে আছে। তৃণমূল মহিলাদের সম্মান করে না। তাঁদের ব্যবহার করে। এখানেও এক জন মহিলাকে ব্যবহার করা হয়েছে। সম্মাননীয় মানুষকে কী ভাবে অপমান করতে হয়, তৃণমূল তা দেখিয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের এই নিকৃষ্ট রাজনীতি একদিন তাঁদের পতনের কারণ হবে।’’
উল্লেখ্য, সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্বে থাকাকালীন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যায় না। তবে রাজ্যপালের পদ থেকে সরে যাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত হতে পারে। অন্য দিকে, রাজ্যপাল বোস চেন্নাই যাওয়ার আগে একটি অডিয়োবার্তায় বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে। তিনি তা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, ‘‘আমি লড়তে জানি। পালাতে নয়।’’