ফাইল চিত্র।
পড়াশোনার ফলাফলটাই শেষ কথা নয়। পরীক্ষার ফলাফলের উপরে নির্ভর করে না বেঁচে থাকা। ফলে পড়ুয়ারা যেন পরীক্ষার ফলাফলের উপরেই নিজেদের মূল্যায়ন না করে। শুক্রবার দুপুরে কনভেন্ট রোডের এক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়াদের এ ভাবেই উদ্বুদ্ধ করলেন এন্টালি থানার পুলিশ অফিসারেরা। শোনালেন এমন মানুষদের গল্প যাঁরা জীবনের প্রথম দুই বড় পরীক্ষাতেই খারাপ ফল করলেও হাল ছাড়েননি। তাই তাঁরা জীবনে সাফল্য পেয়েছেন।
পুলিশকর্মীরা স্কুল পড়ুয়াদের জানান, শুধু পড়াশোনার চাপই নয়। জীবনে এমন অনেক ঘটনা ঘটে যা কারও না কারও কাছে প্রকাশ করা প্রয়োজন। তাতে অবসাদ গ্রাস করতে পারে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, দুশ্চিন্তা থেকে প্যানিক অ্যাটাকও হয়। নিজেকে কী ভাবে তার থেকে মুক্ত রাখা যায় পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সেই পরামর্শ দেন এন্টালি থানার ওসি দেবাশিস দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘অভিভাবকের সঙ্গে বিষয়গুলি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করা দরকার। তাঁরা শুনতে না চাইলে কাছের কোনও বন্ধু কিংবা শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন। কারণ জীবনে এ রকম পরিস্থিতি এলে নিজেকেই শক্ত থেকে মোকাবিলা করতে হয়।’’
রানিকুঠির স্কুলের দশম শ্রেণির মেয়েটির মনের কথা কেউ জানতে পারেননি। বন্ধু-বান্ধব থেকে শুরু করে স্কুলের শিক্ষক কিংবা বাবা-মাও। তাই চরম পরিণতি ঘটিয়েছিল সেই ছাত্রী। তেমনই তাকে কেউ ভালবাসে না জানিয়ে হাতের শিরা কেটে ফেলে নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল বালিগঞ্জের এক স্কুল পড়ুয়াও।
বারবার পড়ুয়াদের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক, এমনকি পুলিশকর্তারাও। আর তাই এ বার স্কুলের পড়ুয়াদের, হতাশা একাকিত্বের গ্রাস থেকে দূরে রাখতে স্কুলেই তাদের বিশেষ পাঠ দিল পুলিশ। এক ঘণ্টার ওই সেশনের পরে অনেক শিক্ষিকাই জানিয়েছেন এ ধরনের মোটিভেশন খুবই জরুরি। বিশেষ করে তাঁদের স্কুলে বিভিন্ন শ্রেণির মেয়েরা বিভিন্ন পরিবার থেকে পড়তে আসে। তারা কাউকেই সব কথা বলতে পারে না। এ ভাবে সেই পড়ুয়ারা যদি মনের গোপন কথা বলার মতো সুযোগ পায়, তাতে তারা উপকৃত হবে বলেই মনে করছেন ওই স্কুলের কর্তৃপক্ষ।