এম পি বিড়লা স্কুলের সামনে অভিভাবকদের বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত।
এম পি বিড়লা কাণ্ডে গ্রেফতার করা হল স্কুলেরই সাসপেন্ড হওয়া কর্মী মনোজকে। সোমবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।
গত জুন ও সেপ্টেম্বরে, দু’-দু’বার এম পি বিড়লা স্কুলের ভিতর সাড়ে তিন বছরের একটি শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয় বলে অভিযোগ ওঠে। শিশুটির মায়ের অভিযোগ, সেই সময়ই স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।
এ দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ তারই প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বেহালার এম পি বিড়লা স্কুলপড়ুয়াদের অভিভাবকেরা। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিও তোলেন তাঁরা। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, পুলিশের লাঠির ঘা এসে পড়ল নিরাপরাধ অভিভাবকদের উপরেই! অভিভাবকদের হটাতে নির্মম ভাবে তাঁদের পেটাল পুলিশ। রেহাই পেলেন না মহিলারাও। লাঠিপেটা করে টেনেহিঁচড়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল অভিভাবকদের।
আরও পড়ুন: জি ডি বিড়লায় জোর করে ঢোকার চেষ্টা রূপার, বাড়ল বিশৃঙ্খলা
রানিকুঠির জি ডি বিড়লা স্কুলের চার বছরের শিশুটির শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় শুরু হতেই এই বিষয়টি সামনে আসে। গত রবিবার যে ভাবে ৫ ঘণ্টা টালিগঞ্জের কাছে রাস্তা অবরোধ করেছিলেন জি ডি বিড়লা স্কুলপড়ুয়াদের অভিভাবকেরা, এ দিন সেই ভাবেই এম পি বিড়লা স্কুলের সামনে অভিভাবকরা জেমস লঙ সরণি অবরোধ করেন।
বেহালার এম পি বিড়লা স্কুলের প্রিন্সিপাল হার্বাট জর্জ এ দিন অভিভাবকদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কথা বলেন। প্রিন্সিপাল অভিভাবকদের আশ্বাস দেন, পুলিশ অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে দিলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যেতে থাকেন অভিভাবকরা। বেলা বাড়লে অভিভাবকদের চাপে স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত এক শিক্ষাকর্মীকে সাসপেন্ড করেন।
কিন্তু তাঁরা যাদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছেন, তাদের গ্রেফতার করা হয়নি, এই যুক্তিতে বিক্ষোভ-অবরোধ তুলে নেননি অভিভাবকরা। ফলে দিনভর স্কুলের ভিতরে আটকে থাকেন শিক্ষকেরা।
সন্ধ্যায় স্কুল বাসে চাপিয়ে স্কুলের ভিতর থেকে শিক্ষকদের বার করতে যায় পুলিশ। তখন সেই বাস আটকে দেন অভিভাবকরা। অভিযোগ, এর পরই অভিভাবকদের উপরে বেপরোয়া লাঠি চালাতে শুরু করে পুলিশ।
এক অভিভাবক বলেন, ‘‘সকাল থেকে না খেয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছি আমরা। ন্যায় বিচার পেতে লড়াই করছি। এখানে তো আর যুদ্ধ করতে আসিনি। তা হলে আমাদের উপরে কেন অন্যায় ভাবে লাঠি চালাল পুলিশ?’’