গ্রেফতার অভিযুক্তরা। ফাইল চিত্র।
পার্ক স্ট্রিটের একটি নামী হোটেলে করোনা-বিধি ভেঙে নাচগানের আসর চলার ঘটনার তদন্তে নেমে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন লালবাজারের তদন্তকারীরা। যেমন, সরকারি বিধি উড়িয়ে কার মদতে আসর বসল, তার উত্তর জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এর জন্য হোটেল কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর। ওই নাচগানের আসরে কী ধরনের মাদক সেবন করা হয়েছিল, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যেই হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং সেখানকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় তল থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা।
লালবাজার সূত্রের খবর, ওই পার্টিতে আসা কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ওই রাতে হোটেলের বেশ কয়েকটি ঘর ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। কাদের নামে ঘরগুলি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল, তাঁদের বাড়ি কোথায়— হোটেলের রেজিস্টার দেখে সে সবও জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
জানা গিয়েছে, ওই আসরে বিভিন্ন পেশার তরুণ-তরুণীরা আসতেন। তাঁদের মধ্যে যোগসূত্র কী, তাঁরা একে অপরকে চেনেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা মাদকের নমুনা ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। পার্টিতে কী ধরনের মাদক সেবন করা হয়েছিল, ফরেন্সিকের রিপোর্ট এলেই তার উত্তর অনেকটা পরিষ্কার হবে বলে তদন্তকারীদের অনুমান। এক পুলিশকর্তা সোমবার বলেন, ‘‘ওই পার্টি আদৌ হোটেল কর্তৃপক্ষের মদতে হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁদের ডেকে পাঠানোরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, পার্ক স্ট্রিটের ওই পাঁচতারা হোটেলের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলে কয়েকটি ঘর ও করিডর জুড়ে শনিবার রাতে পার্টি চলছিল। তারস্বরে বাজানো হচ্ছিল সাউন্ড বক্স। খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মদ ও গাঁজা উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকেই ধরা হয় ৩৭ জনকে। ধৃতদের রবিবার আদালতে তোলা হলে ৯ জনকে পুলিশি হেফাজত দেন বিচারক। বাকিরা জামিন পান। পুলিশি হেফাজতে থাকা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা, কর্তব্যরত পুলিশকে মারধর, ধাক্কাধাক্কি-সহ বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। যদিও অভিযুক্তদের আইনজীবীর দাবি, তাদের মারধরের প্রমাণ হিসেবে পুলিশ আদালতে মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা দিতে পারেনি।
পার্ক স্ট্রিটের হোটেলে এই ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছে, শহরের অন্যান্য পাঁচতারা হোটেলগুলিতেও কি এই ভাবে নাচ-গানের আসরের আয়োজন হচ্ছে? যদিও সেই হোটেলগুলির কর্তৃপক্ষের দাবি, আপাতত এ সবের সরকারি অনুমতি নেই। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী তাঁদের হোটেলে সব কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে।