সতীশ মিশ্র।
টিটাগড়ের তৃণমূল নেতা সতীশ মিশ্র খুনে অবশেষে দুই অভিযুক্ত ভাড়াটে খুনিকে হেফাজতে নিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুর আদালতে পুলিশ তাদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায়। বিচারক, শেখ সমীর এবং সঞ্জয় দাস নামে দুই ধৃতের সাত দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেন।
গ্রেফতার করার পরে মঙ্গলবার আদালতে তোলা হলেও তাদের হেফাজতে চায়নি পুলিশ। ফলে বিচারক দু’জনকেই ১৪ দিনের জন্য জেল হাজতে পাঠিয়েছিলেন। সমীর এবং সঞ্জয়কে পুলিশ কেন হেফাজতে নিল না, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (জোন ১) কে কান্নন জানান, ধৃতদের দিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে। মূল অভিযুক্ত ভোলা প্রসাদ মঙ্গলবার থেকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। ফলে এ দিনও তাকে আদালতে তোলা যায়নি। তাকেও হেফাজতে চাইবে পুলিশ।
তবে সতীশকে কেন খুন করা হল, সে বিষয়ে পুলিশের হাতে তেমন কোনও তথ্য নেই বলে জানিয়েছে তারা। ডিসি জানিয়েছেন, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেই খুনের উদ্দেশ্য স্পষ্ট হবে। সতীশ খুনের তদন্তে পুলিশ আরও কী করে, সেই দিকে তাকিয়ে রয়েছে তৃণমূলের একটি বড় অংশ। তৃণমূল নেতাদের একাংশের ধারণা, খুনের পিছনে দলের সংযোগ থাকলেও থাকতে পারে। টিটাগড়ে মণীশ শুক্ল আক্রান্ত হলে বড় গোলমাল হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাঁর ডান হাত সতীশকে সরানোর ছক কষা হয়। তাতে মণীশ এবং তাঁর রাজনৈতিক গুরু ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহকেও একটা বার্তা দেওয়া হবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তকারীদের ভাবনাতেও রয়েছে এই বিষয়টি। সে ক্ষেত্রে ভোলাকে দাবার বোড়ে হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। তবে অসুস্থতার জন্য ভোলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি। তাকে হেফাজতে পেলে খুনের কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা অনেকটাই কাটবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
টিটাগড়ে মোচিপাড়ার যে পুজো মণ্ডপের সামনে সতীশকে গুলি করা হয়েছিল, সেই পুজো এ বার বন্ধ থাকছে। কারণ, মণ্ডপের মিটার বিশেক দূরেই সতীশের বাড়ি। পুজো হবে কি না, তা নিয়ে বুধবার রাতে বৈঠকে বসেন উদ্যোক্তারা। অন্যতম আয়োজক হিসেবে বৈঠকে ছিলেন মণীশও। পাড়ার অধিকাংশই মত প্রকাশ করেন, এ বার পুজো বন্ধ রাখা হোক। কারণ, সতীশের বাড়ির এত কাছে আলো-বাজনা-বাজির ব্যবহার না হওয়াই মানবিক। মণীশ বলেন, ‘‘আমরা ঠিক করেছি, এ বার কেবল ঘট পুজো করা হবে। সতীশের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই এমন সিদ্ধান্ত।’’