চাঁদু চট্টোপাধ্যায়
বাগুইআটিতে প্রাক্তন বায়ুসেনা কর্মীকে খুনের অভিযোগে তাঁর ধৃত ছেলেকে বুধবার বারাসত আদালতে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে তোলা হলে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শ্যামলবাবুর এক ছেলে থাকেন আমেরিকায়, অন্য ছেলে ধৃত চাঁদুর পরিবার বেঙ্গালুরুতে থাকে। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত মৃতদেহ নেওয়ার জন্য কেউ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরে আইন মোতাবেক পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাতে বাগুইআটির অশ্বিনীনগরের এক বহুতলে প্রাক্তন বায়ুসেনা কর্মী শ্যামল চট্টোপাধ্যায়ের (৮৩) অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। ছেলে চাঁদু চট্টোপাধ্যায় থানায় বাবার মৃত্যুর কথা জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ওই বৃদ্ধের গলায় দাগ দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। চাঁদুকে আটক করে জেরা করা হয়। পুলিশ জানায়, প্রথমে ঘটনার দায় নিলেও পরে খুনের কথা অস্বীকার করেন চাঁদু। মঙ্গলবার ফরেন্সিক দল শ্যামলবাবুর ফ্ল্যাটে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে। সেখান থেকে একটি দড়ি এবং তাতে রক্তের নমুনা মেলে।
ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী শ্বাসরোধ করে মৃত্যু হয়েছে শ্যামলবাবুর। এ দিন চাঁদুর বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। সরকারি কৌঁসুলি বিকাশরঞ্জন দে জানান, পাঁচ দিনের জন্য ধৃতকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সোমবার রাতে ওই ফ্ল্যাটে শ্যামলবাবু এবং তাঁর ছেলে চাঁদু ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। তবে সেই তথ্য যাচাই করতে পরিচারিকা এবং স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিক তদন্তে ফ্ল্যাটের ভিতরে কোনও ধস্তাধস্তি বা লুটের উদ্দেশ্যে ঘর তছনছের চিহ্ন মেলেনি। চাঁদু খুনের কথা স্বীকার না করলেও তাঁকেই সন্দেহের তালিকায় রেখেছে পুলিশ। সেই কারণেই তাঁকে আরও জেরা করতে গ্রেফতারির সিদ্ধান্ত নেয়।
পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদ থেকেই এমন ঘটে থাকতে পারে। তবে অবসাদের কারণ জানতে জেরা করা হচ্ছে ধৃতকে।