প্রতীকী ছবি।
সোনারপুর সুভাষগ্রামের সুকান্ত সরণির জোড়া খুনের ঘটনায় শাশুড়িকে গ্রেফতার করল পুলিশ। অঞ্জলি পণ্ডিত নামে ওই বৃদ্ধাকে রবিবার বারুইপুর আদালতে পেশ করা হয়। ধৃতের পুলিশি হেফাজত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। এখনও অধরা মূল অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার সকালে নিজেদের বাড়ি থেকে মেয়ে সুনীতা পণ্ডিত (৩৭) ও তাঁর বাবা বাসুদেব গঙ্গোপাধ্যায়ের (৭২) ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, শ্বশুর এবং স্ত্রীকে খুন করে ফেরার হয়ে গিয়েছে ঘরজামাই রমেশ পণ্ডিত। রমেশ তার মা অঞ্জলিকে নিয়ে ওই বাড়িতেই থাকত। তদন্তকারীদের দাবি, শুক্রবার রাতে স্ত্রী ও শ্বশুরকে মারধর করার পরে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করে রমেশ। অঞ্জলিও খুনের সময়ে ছেলেকে সাহায্য করেছিল। রমেশ ও সুনীতার চার বছরের শিশুকন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। দিদিমা ও নাতনিকে মুখোমুখি বসিয়ে দফায় দফায় জেরা করা হয়েছে। খুনের ঘটনার ওই দু’জন-ই সাক্ষী ছিল। শিশুটির কিছু বয়ান থেকে তদন্তকারীদের ধারণা, খুন করতে ছেলেকে সাহায্য করেছিল মা। বারুইপুর পুলিশ জেলার এক কর্তা বলেন, “আপাতত শিশুটিকে হোমে রাখা হয়েছে। পরে আদালতে তার গোপন জবানবন্দি নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।”
তদন্তে জানা গিয়েছিল, বাসুদেববাবুর পালিত কন্যা সুনীতা। বছর ছয়েক আগে তিলজলা থানা এলাকার বাসিন্দা রমেশের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন বাসুদেব। বিয়ের পরে রমেশ ঘরজামাই হিসেবে তার মাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতে শুরু করে। সোনারপুরের বাড়িটি বাসুদেববাবু মেয়ের নামে লিখেও দিয়েছিলেন। তিনি একটি সাহিত্য পত্রিকায় কাজ করতেন। অধিকাংশ সময়ই কসবার হালতুতে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। মাঝেমধ্যে সোনারপুরের বাড়িতে যেতেন। কিন্তু লকডাউনের পর থেকে তিনি সোনাপুরের বাড়িতেই থাকা শুরু করেন। সেই সময়ে রমেশের সঙ্গে মেয়ের অশান্তি নিয়ে প্রতিবাদ করতেন বাসুদেববাবু। সেই কারণেই আক্রোশের বশে স্ত্রীর সঙ্গে বাসুদেববাবুকেও রমেশ খুন করেছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
অঞ্জলিকে জেরা করে উঠে এসেছে বেশ কিছু তথ্য। সে সবের ভিত্তিতে তদন্তকারীরা জানান, শুক্রবার রাতে দফায় দফায় সুনীতা ও বাসুদেববাবুর সঙ্গে ঝগড়া হয় রমেশের। এর পরে নিজের ঘরে বসে মদ খায় সে। তার পরে গভীর রাতে প্রথমে স্ত্রী পরে বাসুদেববাবুকে কাঠের বাটাম দিয়ে পিটিয়ে মারার পরে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করে।