হাডকো মোড়

লরির ধাক্কায় মৃত্যু কনস্টেবলের

কলকাতার রাজপথে বেপরোয়া ছোট লরির ধাক্কায় এক কনস্টেবলের মৃত্যুতে ফের পুলিশের বিরুদ্ধে তোলা আদায়ের অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার ভোর সওয়া চারটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে উল্টোডাঙার হাডকো মোড়ের কাছে। পুলিশ জানায়, গৌতম সরকার (৪০) নামে ওই কনস্টেবলকে একটি মালবাহী গাড়ি ধাক্কা মারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৬ ০০:৪৫
Share:

কলকাতার রাজপথে বেপরোয়া ছোট লরির ধাক্কায় এক কনস্টেবলের মৃত্যুতে ফের পুলিশের বিরুদ্ধে তোলা আদায়ের অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার ভোর সওয়া চারটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে উল্টোডাঙার হাডকো মোড়ের কাছে। পুলিশ জানায়, গৌতম সরকার (৪০) নামে ওই কনস্টেবলকে একটি মালবাহী গাড়ি ধাক্কা মারে। গুরুতর জখম অবস্থায় গৌতমবাবুকে আর জি করে নিয়ে যাওয়া হলে কিছুক্ষণ পরে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। গৌতমবাবুর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের আধানিতে। গৌতমবাবুর ন’বছরের একটি মেয়ে আছে। দুর্ঘটনার পরেই ছোট লরিটি ভিআইপি রোডের দিকে পালিয়ে যায়। ঘাতক লরি ও চালকের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের দাবি, এ দিন ওই কনস্টেবল ও আরও কয়েক জন রাস্তায় লরি, ছোট ট্রাক থামিয়ে টাকা আদায় করছিলেন। কিন্তু ঘাতক ছোট লরিটি না থেমে বেরিয়ে যায়। গৌতমবাবু মোটরবাইকে চেপে সেটিকে তাড়া করেন। আরোহী ছিলেন গোপীনাথ বায়েন নামে ফুলবাগান থানার এক হোমগার্ড।

স্থানীয় সূত্রে খবর, মোটরবাইক যখন ছোট লরিটিকে প্রায় ধরে ফেলেছে তখনই ঘটে দুর্ঘটনা। কিছু স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ঘাতক লরিটি কোনাকুনি মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। পুলিশের একটি সূত্রে খবর, সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা গিয়েছে, ছোট লরিটি বেরিয়ে যাওয়ার পরে গৌতমবাবু ও গোপীনাথবাবু কাঁকুড়গাছির দিক থেকে মোটরবাইকে তাড়া করেছিলেন।

Advertisement

পুলিশ অবশ্য সরকারিভাবে সে কথা উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছে, মালবাহী একটি ছোট লরির বেপরোয়া গতির জেরেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ আরও জানায়, গৌতমবাবু ও গোপীনাথবাবু মোটরবাইকে চেপে চা খেতে যাচ্ছিলেন। তখনই ছোট লরিটি তাঁদের পিছন থেকে ধাক্কা মারে। ডিসি (ইএসডি) দেবস্মিতা দাস বলেন, ‘‘পিছন থেকে আসা ছোট লরির ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়েন ওই দুই পুলিশ কর্মী। পরে ওই কনস্টেবলের মৃত্যু হয়।’’ পুলিশের বক্তব্য, হাডকো মোড়ে তখন বেশ কয়েক জন পুলিশ ডিউটিতে ছিলেন। তাঁরাই গৌতমবাবু ও গৌপীনাথবাবুকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

গৌতমবাবু ফুলবাগান থানার কনস্টেবল। হাডকো মোড়ের ওই দুর্ঘটনাস্থল মানিকতলা থানার অন্তর্গত। তা হলে ফুলবাগান থানার কনস্টেবল গৌতমবাবু কর্তব্যরত অবস্থায় ওখানে গিয়েছিলেন কেন? পুলিশের বক্তব্য, হাডকো মোড়ের ফুটপাথে একটি চায়ের দোকান রাত তিনটে থেকে পরদিন বেলা এগারোটা পর্যন্ত খোলা থাকে। আশপাশের থানায় রাতে কর্তব্যরত বহু পুলিশকর্মীই ওই দোকানে চা খেতে যান। গৌতমবাবু ও গোপীনাথবাবুও চা খেতে যাচ্ছিলেন বলে দাবি পুলিশের। তখনই পিছন দিক থেকে ছোট লরিটি মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। এক পুলিশ অফিসার জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, দ্রুত গতিতে আসা ছোট লরিটির ধাক্কায় মোটরবাইকটি প্রথমে বেশ কিছুটা শূন্যে উঠে যায়। তার পরে মোটরবাইক-সহ রাস্তায় ছিটকে পড়েন গৌতমবাবু। তাঁর মাথা, বুক ও হাতে চোট লাগে।

তবে গোপীনাথবাবুকে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি। দেবস্মিতাদেবী বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার ফলে ওই হোমগার্ড আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে রয়েছেন। ওঁর সঙ্গে কথা না বলাই ভাল।’’

গৌতমবাবুর মৃত্যুর খবর পেয়ে এ দিন ফুলবাগান থানায় আসেন তাঁর পরিবার। তাঁর ভাই উত্তম সরকার বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সকালে কাজ সেরে দাদার বাড়ি ফেরার কথা ছিল। সকালেই থানা থেকে খবর এল, দাদা আর নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement