একবালপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর হয়েছিল সকলের চোখের সামনেই। পুলিশ ছিল কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকায়। এমনই অভিযোগ পেয়েছেন পুলিশ কমিশনার। তাঁর কাছে এমনও অভিযোগ গিয়েছে, সুইন হো লেনে দু’দলের মধ্যে মারামারি ইটবৃষ্টিতে গড়ালেও সময়ে পৌঁছতে পারেনি বাহিনী। সোমবার ক্রাইম কনফারেন্সে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা ‘নিষ্ক্রিয়তার’ সে সব অভিযোগ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। এ দিন উষ্মা প্রকাশ করে সব থানার ওসি-কে তিনি নির্দেশ দেন, পুলিশের সামনে যেন আর ভাঙচুরের ঘটনা না ঘটে। এতে পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। স্বর্ণঋণ দেওয়ার এক সংস্থায় ডাকাতির কথাও ওঠে কনফারেন্সে। ঘটনার পাঁচ দিন পরেও ঘটনার কিনারা না হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে সিপি বাহিনীকে নির্দেশ দেন, শহরে এমন সব ক’টি সংস্থার তালিকা তৈরি করতে হবে। সে সব এলাকায় সিসিটিভি বসিয়ে নিরাপত্তা বাড়ানোর দিকে জোর দেন তিনি।
লালবাজার সূত্রের খবর, হাসপাতালের ভাঙচুরের ঘটনায় বাহিনীর ভূমিকা যে তিনি ভাল ভাবে নেননি, এ দিন তা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সিপি। পাশাপাশি, বিভিন্ন ছোটখাটো ঘটনাতেও বারবার উঠে আসে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ প্রসঙ্গেও এ দিন সিপি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তখনই ওঠে কসবার সুইন হো লেনে দু’দলের সংঘর্ষের ঘটনার কথা। গত ৬ ফেব্রুয়ারির ওই ঘটনার খবরে পুলিশ দেরিতে পৌঁছেছিল বলে অভিযোগ তোলেন স্থানীয়েরা। তাঁদের দাবি ছিল, পুলিশ দেরিতে পৌঁছনোয় দু’পক্ষের সংঘর্ষে স্থানীয় এক যুবক নিহত হন। এই ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন সিপি।
লালবাজার সূত্রে খবর, পার্ক স্ট্রিটে স্বর্ণঋণ দেওয়ার অফিসে গত বৃহস্পতিবারের ডাকাতির কথা তুলে সংশ্লিষ্ট বেনিয়াপুকুর থানার ওসি-কে সিপি জিজ্ঞেস করেন, ওই সংস্থার বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন কি না। পুলিশ সূত্রের খবর, শহরের বাইরে এমন বেশ কিছু সংস্থায় ডাকাতি হয়েছে। সে কথা মাথায় রেখেই বাহিনীকে সিপি আগাম সতর্ক করেছেন। পড়শি কোনও রাজ্যের দুষ্কৃতীদল এতে জড়িত কি না, সিপি তাও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।
লালবাজার সূত্রে খবর, শহরে বড় ডাকাতির পাশাপাশি ছোটখাটো চুরির ঘটনাকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখার নির্দেশ দেন সিপি। তা ছাড়া, কোনও অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা খুন না কি আত্মহত্যা, তার তদন্তে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ পেতে পুলিশকে সচেষ্ট হওয়ার পরামর্শও দেন সিপি।