জি ডি বিড়লা স্কুলে ছাত্রী নির্যাতনে অন্যতম অভিযুক্ত অভিষেক রায় ‘ওই দিনের ঘটনা’র কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। মুখ্য সরকারি আইনজীবী রাধাকান্ত মুখোপাধ্যায় সোমবার বলেন, ‘‘তদন্তকারী অফিসার দাবি করেছেন, অন্যতম অভিযুক্ত অভিষেক রায়ের স্বীকারোক্তিপত্র আদালতে পেশ করা হয়েছে।’’ এ দিন আলিপুরে বিশেষ পকসো (প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক রমেশ সিংহের এজলাসে অভিষেক রায় ও মহম্মদ মফিজুদ্দিন, দুই অভিযুক্তকেই হাজির করা হয়। বিচারক ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ওই শিশুর প্রাথমিক মেডিক্যাল রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। আদালত শিশুর গোপন জবানবন্দি ও মেডিকো লিগাল পরীক্ষার আর্জি মঞ্জুর করেছে। ঘটনার পুনর্গঠনের আর্জিও মঞ্জুর হয়েছে। তবে অভিযুক্তদের আইনজীবী তীর্থঙ্কর রায় দাবি করেন, ‘‘এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। তাই পুনর্গঠনের প্রয়োজন নেই। ছবি দেখে শনাক্তকরণের সময় ওই শিশুটির মা ও বাবা পাশে ছিলেন। শিশু মানসিক চাপে শনাক্ত করে থাকতে পারে।’’
অভিষেক এবং মফিজ্জুদিন প্রথম থেকেই বলে আসছেন, তাঁরা নির্দোষ। পুলিশের এক সূত্র জানাচ্ছে, পুলিশি জেরাতেও অভিষেক দাবি করেছেন, ঘটনার দিন বেলা দুটো নাগাদ তিনি স্কুল থেকে বেরিয়ে যান। মফিজউদ্দিনের দাবি, তিনি আড়াইটে নাগাদ বেরিয়ে যান। পুলিশ জানিয়েছে, ওই সময়ে স্কুলে উপস্থিত কর্মীদের বিস্তারিত জেরা করা হবে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ট্র্যাফিক পুলিশের সিসিটিভি ফুটেজও।
লালবাজারের গোয়েন্দাদের নিয়ে গঠিত বিশেষ দল এ দিন ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন এবং কথা বলেন স্কুলের কর্মীদের সঙ্গে। এক আয়া ও সাফাইকর্মীকে পরে আলাদা করে তলব করা হয়েছে। নির্যাতিতার মা-বাবার সঙ্গেও লালবাজারে কথা বলেন তদন্তকারীরা। এ দিন স্কুলের প্রিন্সিপ্যালের বিরুদ্ধে তদন্তেও গঠিত হয় বিশেষ কমিটি। কমিটিতে থাকবেন শিক্ষা দফতর, রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন, আইসিএসই বোর্ড এবং কলকাতা পুলিশের ডিসি ডিডি (২)। বাকি সদস্যদের নাম রাত পর্যন্ত ঠিক হয়নি। পুলিশ সূত্রের খবর, কমিটির রিপোর্ট মেলার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক হবে। বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া স্কুল চালানোর অভিযোগও খতিয়ে দেখা হবে।