গাড়িতে ধৃতেরা। —নিজস্ব চিত্র
স্বাধীনতা দিবসের রাত ও শুক্রবার সকালে উত্তর শহরতলি ও সল্টলেকের দু’টি ঘটনায় পুলিশকে মারধরের অভিযোগ উঠল। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে দু’দল যুবকের মধ্যে হাতাহাতিতে কার্যত রণক্ষেত্র হয় দক্ষিণেশ্বর আইল্যান্ড। আহত হন স্থানীয় কাউন্সিলর ও তাঁর ছেলে-সহ সাত জন। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে আক্রান্ত হয় বরাহনগর ও বেলঘরিয়া থানার পুলিশ। অন্য দিকে সল্টলেকের ঘটনায় এক পুলিশ আধিকারিকের মুখে ঘুসি মারা হয় বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, দক্ষিণেশ্বর আইল্যান্ডের এক দিকে কামারহাটি, উল্টো দিকে বরাহনগর বিধানসভা এলাকা। ওই রাতে দক্ষিণেশ্বরের দুই যুবক বরাহনগরের দিকে একটি দোকানে মদ কিনতে গিয়ে দোকানদারের সঙ্গে বচসা বাধায়। তা গড়ায় হাতাহাতিতে। ওই যুবকেরা পাড়ায় ফিরে আরও লোক নিয়ে ফের ওই দোকানের দিকে যায়। তখন স্থানীয় ছেলেদের নিয়ে আসেন দোকানদারও। মাঝপথে শুরু হয় মারামারি। খবর পেয়ে কামারহাটি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শঙ্করী ভৌমিক ও তাঁর ছেলে অরিন্দম ভৌমিক পৌঁছে যান। গোলমালে পড়ে মাথা ফাটে অরিন্দমের। শঙ্করীদেবীর অভিযোগ, বহিরাগতেরা লাঠি, রড, চেন নিয়ে মারামারি করেছে।
খবর পেয়ে বরাহনগর ও বেলঘরিয়া থানার পুলিশ আসে। দক্ষিণেশ্বর রেল কলোনি এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সাদা পোশাকের পুলিশ নিরীহদের উপরে লাঠি চালায়। পুলিশের পাল্টা দাবি, একদল জনতাকে অন্য দিকে যেতে না দেওয়ায় তারা পুলিশকে আক্রমণ করে। আহত হয়েছে চার-পাঁচ জন পুলিশ। কর্তব্যরত পুলিশকে মারধরের অভিযোগে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে বরাহনগর থানা। গ্রেফতার হয়েছে এক অভিযুক্ত।
হামলার দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার সকালে, সল্টলেকের করুণাময়ী মোড়ে। একটি সরকারি বাসে ভাড়া নিয়ে কন্ডাক্টরের সঙ্গে দুই যাত্রীর বচসা হচ্ছিল। পুলিশের এক আধিকারিক গোলমাল থামাতে গেলে দু’জনের এক জন তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত দুই যাত্রী অরিজিৎ গুপ্ত এবং সৌম্যজিৎ গুপ্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ দিন আদালত তাদের জেল হেফাজত দিয়েছে।
পুলিশ জানায়, যাদবপুর থেকে সরকারি বাসে সল্টলেক আসছিলেন অরিজিৎ ও সৌম্যজিৎ। ভাড়া নিয়ে তাদের সঙ্গে কন্ডাক্টর ও টিকিট পরীক্ষকের বচসা বাধে। রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিশকে ঘটনাটি জানান বাসকর্মীরা। অভিযোগ, বিধাননগর উত্তর থানার এক আধিকারিক পরিস্থিতি সামলাতে এলে অভিযুক্তেরা তাঁকে কটূক্তি করে। তাদের ধরতে গেলে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। অভিযুক্তদের এক জন ওই পুলিশ আধিকারিককে নাকে ঘুসি মারে। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়।
যদিও ধৃতদের তরফে দাবি, তারা পুলিশের গায়ে হাত তোলেনি। ধস্তাধস্তিতে কোনও ভাবে মুখে হাত লেগে গিয়েছে। এক পুলিশকর্তা জানান, ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মীর গায়ে হাত তোলা ও কাজে বাধা দানের অভিযোগ আনা হয়েছে।