পুলিশ পিটিয়ে ধরা পড়েছিল এক হিজড়ে। নিয়মমাফিক রবিবার তাঁকে আদালতেও হাজির করানো হয়েছিল। জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হওয়ায় অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আলিপুর আদালত। পুলিশ সূত্রের খবর, সন্দীপ দুবে নামে ওই হিজড়েকে রাখার জন্য প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষকে পৃথক সেলের বন্দোবস্ত করতে নির্দেশ দেয় আদালত। সেই মতো সেল তৈরি করার পরে এ দিন সন্ধ্যায় সন্দীপকে প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠায় পুলিশ।
কিন্তু কেন ওই অভিযুক্তের জন্য পৃথক সেলের প্রয়োজন হল? কারা দফতর সূত্রে খবর, হিজড়েদের পুরুষ না মহিলা, কোন জেলে রাখা হবে তা নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট গাই়ডলাইন নেই। ফলে হিজড়েরা কোনও মামলায় গ্রেফতার হলে ডাক্তারি পরীক্ষা করে স্থির করা হয় যে তাঁর দেহে পুরুষের বৈশিষ্ট্য বেশি প্রকাশ পেয়েছে না মহিলার বৈশিষ্ট্য। সেই মতো ওই হিজড়েকে পুরুষ বা মহিলা জেলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘২০১২ সালে রাজ্যের এক অ্যাথলিট যৌন নিগ্রহের মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাঁর লিঙ্গ নির্ধারণ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। সে সময়েও এ ভাবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।’’ তিনি জানান, পুরুষ বা মহিলা, যে জেলেই রাখা হোক না কেন, তৃতীয় লিঙ্গভুক্তদের সব সময়েই আলাদা সেলে রাখা হয়।
লালবাজার সূত্রে খবর, শনিবার রাতে ওয়াটগঞ্জে একটি গাড়ি সার্ভিস সেন্টারে চড়াও হয়েছিলেন সন্দীপের ভাই দীপক দুবে। ম্যানেজারকে মারধর করেন তিনি। খবর পেয়ে ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশ গেলে সন্দীপ এবং তাঁর বাবা নন্দ দুবে পুলিশকর্মীদেরও মারধর করেন। সেই সুযোগে এলাকা ছেড়ে পালান দীপক। পুলিশকে মারধর করার অপরাধে রবিবার সন্দীপ ও নন্দকে গ্রেফতার করা হয়। আলিপুর আদালতে হাজির করা হলে দু’জনকেই জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশের একাংশ বলছেন, থানায় লক-আপের ক্ষেত্রে এমন সুবিধা নেই। ফলে তৃতীয় লিঙ্গভুক্ত কেউ ধরা পড়লে হয় থানার ভিতরেই অন্য কোনও জায়গায় বসিয়ে রাখতে হয়। তা না হলে লালবাজারের কোনও ফাঁকা লক-আপে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। শুধু তাই নয়। সারা দেশেই তৃতীয় লিঙ্গভুক্তদের জন্য জেলে পৃথক ব্যবস্থা নেই।