police

বিহারের ঢংয়ে নিমতায় বিয়েবাড়িতে শূন্যে গুলি, পাত্রের জামাইবাবু-সহ ধৃত ২

এলাকার মানুষই ‘আজব’ কারবার দেখে খবর দেন নিমতা থানায়। পুলিশ গ্রেফতার করেছে দু’জনকে। ধৃতদের একজন পাত্রের জামাইবাবু। অন্যজন একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার কর্মী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯ ১৫:৪৮
Share:

এই ভাবেই বিয়ের আসরে গুলি চালাতে দেখা দিয়েছে। নিমতায়। সোমবারের নিজস্ব চিত্র।

বৌভাত শেষ। চার দিকে আত্মীয়স্বজনদের জটলা। তার মধ্যেই দেখা গেল, এক ব্যক্তি দোনলা বন্দুক আকাশের দিকে তুলে পর পর গুলি ছুড়ছেন। না, এটা বিহার বা উত্তরপ্রদেশের কোনও ঘটনা নয়, যেখানে এই রীতি যথেষ্ট প্রচলিত। এই ঘটনা ঘটল সোমবার রাতে উত্তর শহরতলির নিমতায়।

Advertisement

এলাকার মানুষই ‘আজব’ কারবার দেখে খবর দেন নিমতা থানায়। পুলিশ গ্রেফতার করেছে দু’জনকে। ধৃতদের একজন পাত্রের জামাইবাবু। অন্য জন একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার কর্মী।

নিমতা থানা এলাকার আরজি রোডের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাস। পেশায় আইনজীবী। কোনও অনুষ্ঠানবাড়ি ভাড়া না পেয়ে নিজের বাড়ির সামনেই মণ্ডপ বেঁধে বিয়ের আয়োজন করেছিলেন। বিপুল দাস বিশ্বজিৎবাবুরই প্রতিবেশী। তিনি মঙ্গলবার বলেন,“রাতে বিয়ের পর্ব মিটে যাওয়ার পর ওদের বাড়ির সামনেই সবাই গল্প করছিল। হঠাৎ শুনি পর পর গুলির আওয়াজ। তার পর জানতে পারলাম ওরা বিয়ের আনন্দ করতে শূন্যে গুলি চালিয়েছে।”

Advertisement

গুলি চালানোর খবর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্থানীয়দের মাধ্যমে পৌঁছে যায় থানায়। সকালেই পুলিশ এসে গ্রেফতার করে দু’জনকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ধৃতদের নাম নান্টু দে এবং অশোক সিংহ। বিশ্বজিৎবাবুর জামাইবাবু নান্টু। অন্য জন বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী। তদন্তকারী আধিকারিক জানিয়েছেন, বিশ্বজিৎ দাস একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থা থেকে দু’জন বন্দুকধারী নিরাপত্তারক্ষী বিয়ে উপলক্ষে ভাড়া করেছিলেন। তাঁদের বন্দুক থেকেই গুলি চালানো হয়। তদন্তকারী আধিকারিকের দাবি, বাসিন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য এবং ধৃত নিরাপত্তা রক্ষীকে জেরা করে জানা গিয়েছে নান্টুর কথাতেই শূন্যে গুলি চালান নিরাপত্তারক্ষীরা।

যদিও পুলিশের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পাত্র বিশ্বজিৎ নিজে। ফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমার বিয়েটা খুব তাড়াহুড়ো করে ঠিক হয়েছিল। তাই কোনও অনুষ্ঠানবাড়ি ফাঁকা পাইনি। বাড়ির সামনেই বৌভাতের অনুষ্ঠান করি। আমার এক মক্কেল জয় চক্রবর্তী একটি নিরাপত্তা সংস্থা চালান। তাঁর কাছ থেকেই দু’জন সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী ভাড়া করি। কিন্তু ওদের গুলি চালানোর কথা আমরা কেউ বলিনি। উল্টে তাঁদের না করা হয়েছিল। গোটা ঘটনার সঙ্গে আমার জামাইবাবুর কোনও যোগ নেই।”

আরও পড়ুন- প্রার্থীদের ফৌজদারি অপরাধের তথ্য বিজ্ঞাপন দিয়ে জানাতে হবে, নয়া নির্দেশিকা কমিশনের​

আরও পড়ুন- মাঝ রাতে চলল গুলি, জখম যুবক​

তবে স্থানীয়দের একাংশের দাবি, অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাওয়ার পর উর্দি খুলে ফেলেছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁরা ফিরে যাওয়ার তোড়জোড় করছিলেন। সেই সময় বিশ্বজিতের পরিবারের লোকজনের উৎসাহেই গুলি চালানো হয়। তবে এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি নিরাপত্তা সংস্থার মালিক জয় চক্রবর্তী। সশস্ত্র অবস্থায় বেআইনি জমায়েত এবং ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ আনা হয়েছে ধৃতদের বিরুদ্ধে। এ দিন তাঁদের ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement