—প্রতীকী চিত্র।
শহরে কি ফের সক্রিয় ‘গয়া গ্যাং’? এটিএমে কারচুপি করার অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ বিহারের গয়ার দুই বাসিন্দাকে গ্রেফতার করার পরে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে পুলিশ মহলে।
উল্লেখ্য, বছরকয়েক আগে বিভিন্ন কায়দায় এটিএম কারচুপির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল গয়ার একাধিক বাসিন্দাকে। তার পরে ওই গ্যাং সংক্রান্ত তথ্য সামনে আসে। লালবাজারের গোয়েন্দাদের লাগাতার গ্রেফতারির পরে ওই গ্যাংয়ের সদস্যেরা রাজ্য ছেড়ে পালায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে এটিএম থেকে গ্রেফতার হওয়া দু’জনের নাম ধনরাজ কুমার এবং চন্দন কুমার। তাদের বাড়ি গয়ায়। ধৃতদের থেকে হাজার পাঁচেক টাকা এবং এটিএম বিকল করার লোহার পাত উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতেরা মঙ্গলবারই কলকাতায় এসেছিল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ওই চক্রের বাকি সদস্যেরা বিহারে রয়েছে। ধৃতদের জেরা করে বাকিদের সন্ধান করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ জানায়, ঠাকুরপুকুর থানার শখেরবাজারে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের রক্ষীহীন এটিএম আছে। মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ ওই ব্যাঙ্কের কর্মীরা সিসি ক্যামেরায় দুই যুবককে এটিএমের ভিতরে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন। ওই এটিএমের কাছে থাকা ব্যাঙ্কেরই এক আধিকারিককে বিষয়টি দেখার জন্য বলা হয়। তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, এটিএমের বাইরে দাঁড়িয়ে তিন যুবক। ওই আধিকারিক এটিএমে ঢুকে টাকা তোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নিলেও তা এটিএম থেকে বেরোয়নি। এক পুলিশকর্তা জানান, ভিতরে ঢুকে ওই আধিকারিক বুঝতে পারেন, এটিএমে কারচুপি করা হয়েছে। তিনি বাইরে বেরিয়ে আসতেই ওই দুই যুবক ভিতরে ঢুকে যায়। তখনই এটিএমের শাটার নামিয়ে দেন ওই আধিকারিক। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছে দু’জনকে গ্রেফতার করে। তবে তৃতীয় জন আগেই পালিয়ে যায়। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই পুলিশ জানতে পারে, শহরে ফের সক্রিয় ‘গয়া গ্যাং’।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তেরা এটিএমের টাকা বেরোনোর জায়গায় কালো রঙের পাত লাগাত। ফলে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নিলেও তা বাইরে বেরিয়ে আসত না। টাকা বেরোচ্ছে না দেখে গ্রাহক এটিএমে গোলমাল আছে ভেবে বেরিয়ে এলেই ভিতরে ঢুকে পড়ত অভিযুক্তরা। এর পরে কালো পাত সরিয়ে টাকা বার করে নিত।
লালবাজার জানিয়েছে, এ বারের ধৃতদের সঙ্গে আগে গ্রেফতার হওয়া গয়া গ্যাংয়ের এটিএম কারচুপির ধরনের মধ্যে ফারাক রয়েছে। আগে গয়া গ্যাং এটিএমের ‘কি বোর্ড’-এর দু’টি বা তিনটি বোতামের মধ্যে আঠা জাতীয় কিছু লাগিয়ে দিত। গ্রাহক সেই বোতাম টিপলে তা আটকে গিয়ে অকেজো হয়ে যেত যন্ত্রটি। গ্রাহক মেশিন খারাপ ভেবে বেরিয়ে গেলেই ভিতরে ঢুকত ওই গ্যাংয়ের সদস্যেরা। বোতামে লাগানো আঠা তুলে নিলেই যন্ত্রটি সচল হয়ে যেত। গ্রাহক যত টাকা ওই মেশিনে লিখেছিলেন, তা তুলে নিত দুষ্কৃতীরা।