প্রতীকী ছবি।
এক মূক ও বধির তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনার ১২ দিনের মাথায় এ বার এক নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল শহরে। এই ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পকসো (প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) ধারার পাশাপাশি, ভারতীয় দণ্ডবিধির গণধর্ষণের ধারা যুক্ত করে মামলা রুজু করেছে জোড়াবাগান থানার পুলিশ। রবিবার ধৃতদের শিয়ালদহের বিশেষ আদালতে তোলা হলে তাদের এক দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আজ, সোমবার মামলাটি পকসো আদালতে তোলা হতে পারে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত শনিবার, সরস্বতী পুজোর দিন এই ঘটনা ঘটে। জোড়াবাগান থানা এলাকার বাসিন্দা, বছর সতেরোর ওই নাবালিকাকে কলকাতা ঘুরিয়ে দেখানোর ও মোবাইল কিনে দেওয়ার নাম করে সঙ্গে করে নিয়ে বেরিয়েছিল বছর বিয়াল্লিশের এক প্রতিবেশী। পুজোর দিন সকাল থেকে শহরে ঘুরেছিল দু’জনে।
তারা চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। এর পরে আনন্দপুর এলাকার একটি রেল আবাসনের ঘরে নাবালিকাকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ জেনেছে, ওই ঘরটি জয় অরোরা ওরফে যোগিন্দরলাল অরোরা নামে এক ৮৪ বছরের বৃদ্ধের। অভিযোগ, এর পরে সেখানেই এই নাবালিকাকে
গণধর্ষণ করা হয়। পরে বাড়ি ফিরে সে তার বাবাকে সেই কথা জানালে তিনি মেয়েকে নিয়ে গিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
তদন্তে নেমে জোড়াবাগান থানার পুলিশ ওই নাবালিকার সঙ্গে কথা বলে। সে পুলিশকে জানায়, মোবাইল কিনে দেওয়ার জন্য সে বায়না শুরু করলে প্রথমে তাকে মারধর করা হয়। তার পরে ওই দুই অভিযুক্ত তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এর পরেই দ্রুত ওই নাবালিকাকে একটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। আলাদা করে তার কাউন্সেলিংও করানো হয়। আপাতত নাবালিকাটিকে একটি সরকারি হোমে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
ওই নাবালিকার বাবা জানিয়েছেন, তাঁরা আদতে বিহারের বাসিন্দা হলেও মালবাহকের কাজ নিয়ে
বর্তমানে কলকাতায় থাকেন। দিনকয়েক আগেই কলকাতায় এসেছিল ওই নাবালিকা। অভিযুক্ত ওই প্রতিবেশীকে সে কাকু বলে ডাকত। তাই সে মেয়েটিকে শহর ঘোরাতে নিয়ে যাবে বলায় পরিবারের কারও সন্দেহ হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ জানুয়ারি এক মূক ও বধির তরুণীকে ট্যাক্সিতে তুলে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল চালকের বিরুদ্ধে। জানা যায়, বাইপাসের ধারে এক জায়গায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণের পরে নামিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রাতে রাস্তা চিনতে না পারায় বাড়ি ফিরতে পারেননি তিনি। পরের দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাড়ি ফিরে তিনি ফের অভিযোগ দায়ের করতে কলকাতায় আসেন। কিন্তু প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন অভিযোগ দায়ের করাতে তাঁকে ছুটে বেড়াতে হয় থানায় থানায়। আনন্দপুর, তিলজলা ঘুরে তিনি শেষে প্রগতি ময়দান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। প্রথমেই ইন্টারপ্রিটার না-পাওয়ার কারণে ওই তরুণীকে ঘুরতে হয়েছিল কি না, সেই প্রশ্নও ওঠে। যদিও জোড়াবাগান থানার এই ঘটনায় পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করে ব্যবস্থা নিয়েছে বলে নাবালিকার পরিবারের দাবি।