মৃত চন্দন সিংহ (২০)। —ফাইল চিত্র।
লিলুয়ায় প্রকাশ্যে এক যুবককে খুনের ১২ ঘণ্টার মধ্যে মূল অভিযুক্ত-সহ পাঁচ জনকে ধরল পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে আসানসোল রেল পুলিশ, আসানসোল রেল রক্ষী বাহিনী ও হাওড়া কমিশনারেটের গোয়েন্দাদের নিয়ে গঠিত একটি দল অভিযান চালিয়ে তাদের ধরে। পাঁচ জনের মধ্যে এক জনকে ধরা হয় লিলুয়া থেকে, বাকিদের আসানসোল স্টেশন থেকে। ধৃতদের নাম সুভাষ সিংহ, কুণাল প্রসাদ, বিজয় তিওয়ারি ওরফে ছোটু, হরি তিওয়ারি ও দিবাকর ঝা। সুভাষই মূল অভিযুক্ত। ধৃতদের মধ্যে চার জনের বয়স ১৬ থেকে ২০-র মধ্যে। ধৃতদের এ দিন আদালতে তোলা হলে তাদের আট দিনের পুলিশি হেফাজত হয়।
বুধবার বিকেলে লিলুয়া উড়ালপুলে কুপিয়ে খুন করা হয় স্থানীয় পটুয়াপাড়ার বাসিন্দা চন্দন সিংহকে (২০)। সুভাষ-সহ চার জনের নামে অভিযোগ করে মৃতের পরিবার। হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (উত্তর) অমিতকুমার রাঠৌর জানান, ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হয়। বুধবার রাতে লিলুয়ার এন এস রোড থেকে প্রথমে ধরা হয় কুণালকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ধরা হয় সুভাষ, বিজয়, হরি ও দিবাকরকে।
তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতেরা জেরায় জানায়, তারা দেওঘরে পালানোর পরিকল্পনা করে। খুনের পরে সুভাষ, বিজয় ও দিবাকর মোটরবাইকে চেপে হাওড়া স্টেশনে আসে। কিন্তু বিহারে যাওয়ার ট্রেন না থাকায় তারা শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে আসে আসানসোল। অন্য দিকে হরি বাসে আসানসোল পৌঁছয়। সকলে আসানসোল স্টেশনের কাছে ঝাঁসির রানি ময়দানে গা-ঢাকা দিয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। এ দিকে, আসানসোলে চার জন ধরা পড়ার খবর পৌঁছয়নি তাদের সঙ্গীদের কাছে। তাই পলাতক অভিযুক্তদের হাতে টাকা তুলে দিতে এ দিন ভোরে মালিপাঁচঘরার বাড়ি থেকে বাইক নিয়ে রওনা হয় সুভাষের ভাই আকাশ সিংহ। তার উপরে নজরদারি চালাচ্ছিল নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ। ডানকুনির কাছে ধরা হয় তাকে। আকাশের কাছে দু’হাজার টাকার ১০টি জাল নোট মিলেছে। গোয়েন্দাদের অনুমান, পালানোর সময়ে বেশি টাকা নিতে পারেনি অভিযুক্তেরা। তাই বেশি দিন গা-ঢাকা দিয়ে থাকার সম্ভাবনার কথা ভেবে তাদেরকে টাকা পৌঁছে দিতে রওনা দিয়েছিল আকাশ। পুলিশের দাবি, জেরায় সুভাষ জানিয়েছে, খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রগুলি সে শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে ফেলেছে। পুলিশ জানিয়েছে, সুভাষের নামে একাধিক অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ আছে।