প্রতীকী ছবি।
বিমানবন্দর চত্বরই ছিল তাঁর ঘরবাড়ি। কখনও পুরনো টার্মিনালের উল্টো দিকের মন্দির-চত্বর, কখনও তার গা ঘেঁষা ঝুপড়ি। ইদানীং পুরনো পরিত্যক্ত টার্মিনালের সামনের ছাউনির নীচেই তিনি সংসার পেতে বসেছিলেন। সংসার বলতে— তিনি, তাঁর ছেলে এবং তাঁদের পাশে ঘুরঘুর করা একটি পথ-কুকুর।
শীতের রাতে সেই মহিলা মালা চক্রবর্তীর (৭০) মৃত্যু হল। শনিবার রাতে এমন সময়ে সেই খবর পাওয়া যায়, যখন মালাদেবীর মৃত্যুর শংসাপত্র পেতে হিমশিম খেতে হয় স্থানীয় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (এনএসসিবিআই) থানার পুলিশকে। কলকাতা বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্ব এখন বর্তেছে চার্নক হাসপাতালের উপরে। গভীর রাতে তাদের চিকিৎসককে ডেকে এনে শংসাপত্র নেওয়া হয়। শনিবার রাতেই স্থানীয় থানার পুলিশ টাকা-পয়সা জোগাড় করে বৃদ্ধার শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বহু দিন ধরে বিমানবন্দর চত্বরে ভিক্ষা করে দিনযাপন করতেন মালাদেবী। কবে তাঁর স্বামী তাঁকে ও সন্তানকে ফেলে গিয়েছেন, তা কেউ মনে করতে পারেন না। মালার ছেলের নাম ‘কেলেম’ বলেই সকলে জানেন। এক সময়ে কলকাতায় আসা আন্তর্জাতিক যাত্রীদের কাছ থেকে ডলার ভিক্ষা করতে দেখা যেত ছোট কেলেমকে। বাইরে সেই ডলার বিক্রি করতে গিয়ে বহু বার পুলিশের তাড়া খেতে হয়েছে তাঁকে। বর্তমানে ২৫ বছরের যুবক কেলেম বিভিন্ন লোকের ফরমায়েশ খাটেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক অতীতে মালাদেবীর পায়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় তাঁর জন্য একটি হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করেছিলেন কেলেম। মালাদেবী সেই হুইলচেয়ারে করেই বিমানবন্দর চত্বরে ঘুরে বেড়াতেন।