ফাইল চিত্র
ওঁদের জন্য কোনও লকডাউন নেই। সাধারণ মানুষ নানা ভাবে অন্যের ছোঁয়াচ এড়ানোর চেষ্টা করছেন। ওঁদের সেই উপায়ও নেই। কারণ, করোনার বিরুদ্ধে সামনের সারিতে থেকে লড়াই করছে হচ্ছে ওঁদের, অর্থাৎ পুলিশকর্মীদের।
বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রের খবর, সেখানে একশোর কাছাকাছি পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকও রয়েছেন। তবে আশার কথা হল, অধিকাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বাকিরাও হওয়ার পথে। কমিশনারেট সূত্রের খবর, থানা, ট্র্যাফিক কিয়স্ক, ব্যারাক ও পুলিশের গাড়ি নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি, মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ারের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে পুলিশকর্মীদের জন্য। তাঁদের শরীরের তাপমাত্রাও মাপা হচ্ছে নিয়মিত। কমিশনারেটে রয়েছে একটি মনিটরিং সেল। তারা পুলিশকর্মীদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজ রাখছে ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে।
পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, থানা-ভিত্তিক সুরক্ষার নানা ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেমন, বাগুইআটি, লেক টাউন, টেকনো সিটি-সহ একাধিক থানায় নির্দিষ্ট সংখ্যক বহিরাগতকেই ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। অভিযুক্ত বা ধৃতদের নিয়ে এলে আগের তাঁদের জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে এবং মাস্ক দেওয়া হচ্ছে। থানার লক-আপও জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে নিয়মিত।
বিধাননগরের ডিসি (ট্র্যাফিক) ধৃতিমান সরকার জানান, আক্রান্ত পুলিশকর্মীদের মধ্যে ১৫ জন ট্র্যাফিকের। তাই প্রতিটি কিয়স্ক থেকে শুরু করে ট্র্যাফিক গার্ড, নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি মাস্ক ও বিশেষ সুরক্ষা পোশাক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘করোনার সঙ্গে যুদ্ধে মূল অস্ত্র হল, এস এম এস (সোশ্যাল ডিসট্যান্স, মাস্ক এবং স্যানিটাইজ়েশন)। এই তিনটে মানতেই হবে।’’ কিন্তু সামাজিক দূরত্ব সব সময়ে মানা সম্ভব হয় না বলেই জানাচ্ছেন পুলিশকর্মীদের একাংশ। কারণ, অপরাধ দমন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, ভিড় বা যান নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে করোনায় আক্রান্তদের সহায়তা— পুলিশকে সব কাজেই নামতে হচ্ছে। ফলে মানুষের সংস্পর্শ এড়ানো যাচ্ছে না। সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছেই। এ প্রসঙ্গে বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার মুকেশ বলেন, ‘‘পুলিশকর্মীরা যাতে সুরক্ষা-বিধি মেনে কাজ করে সুস্থ থাকতে পারেন, তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করেছি আমরা।’’
পুলিশকর্মীদের অনেকেই ব্যারাকে থাকেন। তাঁরা কেউ অসুস্থ হলে যাতে দ্রুত কোনও আইসোলেশন কেন্দ্র বা হাসপাতালে পাঠানো যায়, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি, বয়স্ক কর্মীদের ক্ষেত্রে ছুটি বা ঘরে ফেরার বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখা হচ্ছে বলে জানান এক আধিকারিক।
এ সবের পাশাপাশি নানা কারণে পুলিশকর্মীরা মানসিক অবসাদের শিকার হচ্ছেন বলেও খবর। পুলিশকর্তারা জানান, তাঁরা যতটা সম্ভব পাশে থেকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছেন বাহিনীকে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)