—প্রতীকী চিত্র।
কখনও এসএমএস পাঠিয়ে বলা হত, বাড়ির বিদ্যুতের বিল বকেয়া রয়েছে। অবিলম্বে বিল না মেটালে সংযোগ কেটে দেওয়া হবে। সঙ্গে দেওয়া থাকত একটি লিঙ্ক। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই ঘটত বিপদ। কখনও আবার দেওয়া হত মোটা টাকা আয়ের প্রলোভন। গত কয়েক বছরে এমন ভাবেই বিভিন্ন পন্থায় বহু মানুষের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জালিয়াতেরা। এই সাইবার অপরাধ কমানো অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল পুলিশের কাছে।
তারই প্রাথমিক ধাপ হিসাবে ‘ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি’ (আইএমইআই) নম্বর বন্ধ করে গত ১৫ দিনে ১০০টিরও বেশি মোবাইল অকেজো করেছে কলকাতা পুলিশ। আরও কিছু মোবাইলের আইএমইআই নম্বর বন্ধের প্রক্রিয়া চলছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর। ভুক্তভোগীরা বলছেন, পুলিশের এই নয়া ‘দাওয়াই’ কত দূর ফলপ্রসূ হয়, এখন সেটাই দেখার।
এত দিন সাইবার অপরাধের তদন্তে নেমে যে মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে অপরাধ ঘটানো হয়েছে, সাধারণত সেটি বন্ধ করে দিতেন তদন্তকারীরা। কিন্তু এতে অপরাধে লাগাম টানা যাচ্ছিল না। এর পরেই আইএমইআই নম্বর ব্লক করার সিদ্ধান্ত নেন পুলিশকর্তারা। তাঁদের যুক্তি ছিল, একটি সিম কার্ড ব্লক করলে যত তাড়াতাড়ি আর একটি সিম কার্ড তুলে নিয়ে ফের একই ধরনের অপরাধ করতে পারে প্রতারকেরা, আইএমইআই নম্বর ব্লক করলে অত দ্রুত তা করা সম্ভব নয়। কারণ, আইএমইআই নম্বর ব্লক করলে ফোনটিই অকেজো হয়ে যাবে। অপরাধীর পক্ষে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ফোন বদলানো সম্ভব নয়। সেটা ব্যয়সাপেক্ষও বটে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই পন্থা নিলে সাইবার অপরাধ কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব।
লালবাজার সূত্রের খবর, কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে আইএমইআই নম্বর ব্লক করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর জন্য টেলিকম মন্ত্রকের তরফে একটি নিদিষ্ট পোর্টাল রয়েছে। সেখানে সাইবার অপরাধে ব্যবহৃত ফোনের তথ্যপঞ্জি এবং প্রমাণ দিলে আইএমইআই নম্বর ব্লক করা সম্ভব। শুধু কলকাতা নয়, রাজ্যের অন্যত্রও এই কাজ শুরু হয়েছে। পুলিশের দাবি, এমন ভাবে গত কয়েক দিনে সাইবার অপরাধে যুক্ত শতাধিক মোবাইল অকেজো করা গিয়েছে। যার বেশির ভাগই ভিন্ রাজ্যের। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘প্রতিদিন অন্তত পাঁচ-ছ’টি করে মোবাইলের আইএমইআই নম্বর ব্লক করা হচ্ছে। আশা করা যায়, এতে সাইবার অপরাধে রাশ টানা যাবে। তবে এর পাশাপাশি নাগরিকেরা আরও সচেতন হলে পুলিশের কাজ সহজতর হবে।’’