নিরুপায়: মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পরে নির্মীয়মাণ মেট্রো প্রকল্প এলাকা দিয়ে এ ভাবেই যাতায়াত। সোমবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে গার্ডেনরিচ উড়ালপুল দিয়ে পাঠানো হচ্ছে ডায়মন্ড হারবার রোডের বিভিন্ন বাস। এতে ফাঁকা পড়ে থাকা উড়ালপুল দিয়ে গাড়ি চলাচলের সংখ্যা বাড়লেও বেহালা-ঠাকুরপুকুরের বাসযাত্রীদের বেশি পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ বার ওই উড়ালপুল দিয়ে বেহালা যাওয়ার পথ আরও সুগম করতে গার্ডেনরিচ উড়ালপুলের সঙ্গে ব্রেস ব্রিজ এবং তারাতলা রোড যুক্ত করা হচ্ছে। তার জন্য দু’টি নতুন সংযোগকারী র্যাম্প তৈরি করা হবে। যার মাধ্যমে ওই উড়ালপুলের সঙ্গে সংযুক্তিকরণ হবে ব্রেস ব্রিজের।
নবান্ন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ওই দু’টি সংযোগকারী র্যাম্পের জন্য সমীক্ষার কাজ শেষে সবিস্তার প্রকল্প রিপোর্ট জমা পড়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের থেকে ছাড়পত্র এলেই ওই র্যাম্প তৈরির কাজ শুরু হবে। বন্দর এলাকার জমিতেই ওই সংযোগকারী র্যাম্প দু’টি তৈরি হওয়ার কথা। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘গার্ডেনরিচ উড়ালপুলের সঙ্গে ব্রেস ব্রিজ এবং তারাতলা রোডের সংযোগ স্থাপন হলে শুধু বেহালাবাসীদেরই নয়, বজবজ রোড দিয়ে যাতায়তকারীদেরও সুবিধে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা ওই কাজ শুরু করতে চাই।’’ ইতিমধ্যেই জিঞ্জিরাবাজার থেকে বাটানগর পর্যন্ত একটি নতুন উড়ালপুল তৈরি হচ্ছে বজবজ রোডের উপরে। যার কাজ প্রায় শেষের দিকে। পুজোর পরেই ওই উড়ালপুলের উদ্ধোধন হওযার কথা। ওই উড়ালপুল চালু হলে ব্রেস ব্রিজের উপরে গাড়ির চাপ বাড়বে। মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পরে এমনিতেই ওই রাস্তায় গাড়ি বেড়ে গিয়েছে। পুলিশের একাংশের আশঙ্কা, ওই দুইয়ের মধ্যে সংযোগকারী রাস্তা তৈরি না হলে আগামীতে গাড়ির যানজটে সমস্যা প্রকট হবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সাড়ে চার কিলোমিটার লম্বা, চার লেনের ওই উড়ালপুলটি ধরে মাঝেরহাট সেতুর কাছ থেকে গার্ডেনরিচের ব্রুকলিন মোড় পর্যন্ত সহজেই চলে যাওয়া যায়। আবার গার্ডেনরিচ থেকে উঠে রিমাউন্ট রোডে নামা যায় খুব সহজেই। কিন্তু মাঝেরহাট সেতু ভাঙার আগে ওই উড়ালপুল তেমন ভাবে ব্যবহার করতেন না গাড়িচালকেরা। মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পর থেকে পুলিশের নির্দেশে বেহালা-ঠাকুরপুকুর-জোকার বিভিন্ন রুটের বাস গার্ডেনরিচ উড়ালপুল দিয়ে গার্ডেনরিচ-তারাতলা রোড হয়ে যাতায়ত করছে। চালক থেকে যাত্রী সকলেরই অভিযোগ, ওই উড়ালপুল ব্যবহার করার ফলে তাঁদের অতিরিক্ত সময় লাগছে। কারণ বেশি রাস্তা ঘুড়তে হচ্ছে। অভিযোগ অস্বীকার করছেন না ট্র্যাফিক পুলিশের অফিসারেরাও। তাই কিছু দিন আগেই লালবাজারের তরফে ওই নতুন উড়ালপুলের সঙ্গে তারাতলা রোড-ব্রেস ব্রিজ সংযোগ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল নবান্নে। মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পরে আবার সেই প্রস্তাব নিয়ে ভাবনা-চিন্তা হয়। তা মেনে নিয়ে প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করা হয় কেএমডিএ-র তরফে।
কী বলা হয়েছে ওই প্রস্তাবে?
পুলিশ জানিয়েছে, ব্রেস ব্রিজ রেললাইন পার করার পরে দু’পাশ দিয়ে দু’টি র্যাম্প উঠবে। হাইড রোডের জৈন কুঞ্জের কাছে গিয়ে ওই দু’টি র্যাম্প গার্ডেনরিচ উড়ালপুলের দু’পাশে মিশবে। প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ওই র্যাম্প হবে বন্দরের জমিতে। তাই বন্দরের সঙ্গে কয়েক দফায় কথা হয়েছে নবান্নের। বন্দর কর্তপক্ষ সবুজ সঙ্কেত দিলেই টেন্ডার ডেকে ওই কাজ শুরু করা হবে বলে নবান্ন সূত্রে জানানো হয়েছে।