ফাইল চিত্র
মাত্র দু’দিন স্থির থাকার পরে বৃহস্পতি ও শুক্র, পর পর দু’দিনই ফের বাড়ল তেলের দাম। উৎসবের আমেজের মধ্যে আমজনতার জীবনযাত্রা আরও কঠিন হওয়ার আশঙ্কা পাকা করে গড়ল নতুন নজির। শুক্রবার কলকাতায় আইওসি-র পাম্পে পেট্রল লিটার পিছু ৩৩ পয়সা বেড়ে হয়েছে ১০৫.৭৬ টাকা। ডিজেল পৌঁছেছে ৯৭ টাকার মুখে। ৩৫ পয়সা বেড়ে তা বিক্রি হয়েছে ৯৬.৯৮ টাকায়। হিসাব বলছে, শুধু অক্টোবরেই কলকাতায় প্রতি লিটার ডিজেলের দাম (শুক্রবার পর্যন্ত) বেড়েছে ৪ টাকার বেশি। পিছিয়ে নেই পেট্রল-ও। সেটি দামি হয়েছে ৩.৬০ টাকা।
দিল্লিতে এ দিন পেট্রল লিটারে ১০৫ টাকা ছাড়িয়ে হয়েছে ১০৫.১৪ টাকা। মুম্বইতে আরও বেশি, ১১১.০৯ টাকা। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা-সহ কিছু রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় ইতিমধ্যেই পেট্রলের মতো সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে ডিজ়েল। তবে মেট্রো শহরগুলি মধ্যে সেই তালিকায় এখন রয়েছে শুধু মুম্বই। তার পরে দৌড়ে এগিয়ে চেন্নাই। সেখানে গণ-পরিবহণের এই জ্বালানিটির দাম ৯৮.২৬ টাকা। ফলে কাঁপছে কলকাতা। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, অবিলম্বে দামে রাশ টানার কোনও ব্যবস্থা না-হলে এই শহরেও ডিজেলের ১০০ টাকা হতে খুব বেশি দেরি নেই।
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে যখন কাজ-কারবারে কিছুটা হলেও গতি আসছে, তখন তেল, গ্যাসের মতো জ্বালানির দর অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর পথে কাঁটা হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। বিশেষত বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম (ব্রেন্ট ক্রুড) যেখানে ব্যারেল প্রতি আরও বেড়ে প্রায় ৮৫ ডলারের কাছে পৌঁছেছে। জ্বালানির বিপুল দর বিশ্ব জুড়ে মূল্যবৃদ্ধির হারকে ঠেলে আরও উপরে তুলতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইএমএফ-ও। দেড় বছর ধরে করোনা-ক্লিষ্ট সাধারণ মানুষের যখন জ্বালানি, মূল্যবৃদ্ধিতে বিপর্যস্ত অবস্থা, তখন মোদী সরকার একই রকম নির্বিকার এবং নীরব। চড়া উৎপাদন শুল্ক ছেঁটে বা অন্য কোনও ভাবে দেশবাসীকে সুরাহা দেওয়ার কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। রাজ্যগুলির ক্ষেত্রেও তাদের করের ভাগ কমানোর তেমন লক্ষণ নেই। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, আগামী দিনে আর কত দুর্ভোগ বাকি সেটাই দেখার।