ধরাছোঁয়া: যামিনী রায়ের ছবির ত্রিমাত্রিক ইনস্টলেশন জাদুঘরে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
যামিনী রায়ের আঁকা ‘তিন রমণী’ ছবিটির টানা চোখের বর্ণনা এত দিন শুধু শুনেই এসেছেন তাঁরা। এখন সেই শিল্পকর্মই ছুঁয়ে দেখতে পারবেন দৃষ্টিহীনেরা।
যামিনী রায়ের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সম্প্রতি ভারতীয় জাদুঘরের চিত্রশিল্প প্রদর্শশালায় শিল্পীর চারটি ছবির ত্রিমাত্রিক ইনস্টলেশন বসানো হয়েছে। তৈরি হচ্ছে শিল্পীর আরও একটি আঁকা ‘বাউল’-এর ইনস্টলেশন, যা দৃষ্টিহীনেরা ছুঁয়ে দেখতে পারবেন। এর আগে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পদ্মপত্রে অশ্রুবিন্দু’ এবং বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়ের ‘শিমুল গাছ’-এর ত্রিমাত্রিক ইনস্টলেশন তৈরি করা হয়েছে। পাশেই রাখা আছে ব্রেলে লেখা শিল্পের বর্ণনা।
জাদুঘরের কলা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক অর্ণব বসু বলেন, ‘‘কোনও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষ এলে আমরা তাঁর কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছি। ইনস্টলেশন ছুঁয়ে দেখার সময়ে তাঁদের শিল্পকর্মটি সম্পর্কে বুঝিয়ে বলেও দেওয়া হয়।’’
নরেন্দ্রপুর ব্লাইন্ড বয়েজ় অ্যাকাডেমির প্রাক্তন অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘ছুঁয়ে দেখতে না পারলে দৃষ্টিহীনদের জাদুঘরে গিয়ে তো লাভ নেই। এটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। এতে দৃষ্টিহীনেরা আঁকার প্রতি আগ্রহী হবেন। দৃষ্টিহীন ভাস্করেরাও সমৃদ্ধ হবেন।’’
অর্ণববাবু জানান, বিশ্বজিৎবাবুর পরামর্শ মেনেই ইনস্টলেশনগুলি তৈরি করা হয়েছে। পরে প্লাস্টার অব প্যারিস দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কিছু ছবি ছাড়াও কালীঘাটের পটের ত্রিমাত্রিক ইনস্টলেশনও তৈরি করা হবে।
জাদুঘরের অধিকর্তা অরিজিৎ দত্তচৌধুরী বলেন, ‘‘বিশেষ চাহিদাসম্পন্নেরা জাদুঘরের এই বিপুল সম্পদ থেকে যেন বঞ্চিত না হন, সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে।’’