—ফাইল চিত্র।
রথের শোভাযাত্রায় থমকে গেল পথের গতি। লালবাজারের তথ্য বলছে, মঙ্গলবার রথ উপলক্ষে ছোট-বড় মিলিয়ে ৯৪টি শোভাযাত্রা বেরিয়েছিল রাজপথে। যার ফলে দুপুরের পর থেকে কোথাও রাস্তা বন্ধ ছিল ঘণ্টাখানেক, কোথাও আবার তারও বেশি। পুলিশ বিকল্প পথে গাড়ি ঘুরিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেছে বলে দাবি লালবাজারের। তাতেও অবশ্য ছুটির দিনে পরিবার বা রোগীকে নিয়ে বেরিয়ে ভোগান্তির শিকার হলেন বহু মানুষ।
এ দিন সপরিবার বেরিয়েছিলেন উল্টোডাঙার সাম্য শূর। প্রায় ঘণ্টাখানেক রাস্তায় আটকে থাকতে হয় বলে সাম্যের অভিযোগ। তাঁর কথায়, ‘‘বিকেলে পরিবার নিয়ে শ্রীরামপুরের দিকে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু, এক জায়গায় দাঁড়িয়েইতো ঘণ্টাখানেক কেটে গেল। আর যাব কী ভাবে!’’ পিসেমশাইকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে যানজটে আটকে নাকাল হতে হল যাদবপুরের বাসিন্দা অমিয় মুখোপাধ্যায়কে। তাঁদের প্রায় ঘণ্টা দেড়েক আটকে থাকতে হয় বলে অভিযোগ।
লালবাজার জানিয়েছে, এ দিন ৯৪টির মধ্যে আটটি শোভাযাত্রায় ভক্তের সংখ্যা ছিল সব থেকে বেশি। দুপুরের পর থেকে শরৎ বসু রোড, হাজরা রোড, এ জে সি বসু রোড, আলিপুর পার্ক রোড, বিবেকানন্দ রোড-সহ একাধিক রাস্তায় শোভাযাত্রা বেরোয় বলে জানা গিয়েছে। শহরের অলিগলিতেও রথের শোভাযাত্রা দেখা গিয়েছে। শোভাযাত্রার জন্য উত্তরমুখী চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের একাংশ বন্ধ করে দেওয়া হয় কলকাতা পুলিশের তরফে। ঘণ্টাখানেক বন্ধ ছিল মধ্য কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাও।ফলে অন্যান্য রাস্তায় চাপ বাড়তে থাকে। যা সামলাতে পুলিশ একাধিক রাস্তায় গাড়িও ঘুরিয়ে দেয়। তবু যানজটে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হয় বলে অভিযোগ। এমনকি, ঘণ্টাখানেক পরে রাস্তা খুলে দিলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পেরিয়ে যায় আরও সময়। উত্তর ও দক্ষিণ মিলিয়ে যানজটে নাকাল হতে হয় মানুষকে।
লালবাজার সূত্রের খবর, রথের মিছিল সামলাতে এ দিন কলকাতার রাস্তায় অতিরিক্ত ১৫০০ জন পুলিশকর্মীকে নামানো হয়েছিল। রথের বড় শোভাযাত্রা ঘিরে যে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সহকারী নগরপাল পদমর্যাদার আধিকারিকদের। হাজরা মোড়ে কর্মরত, ট্র্যাফিক সামলাতে হিমশিম খাওয়া এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘পরিস্থিতি যে হাতের বাইরে যেতে পারে, এই অনুমান করেই রাস্তায় নামানো পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছিল। যতটা সম্ভব পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করা হয়েছে।’’
লালবাজারের এক পুলিশকর্তার দাবি, ‘‘ভোগান্তি এড়াতে এ দিন একাধিক বিকল্প পথের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শোভাযাত্রা শেষ হতেই যত দ্রুত সম্ভব অবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা হয়েছে। সেই জন্য অতিরিক্ত পুলিশকর্মীও মোতায়েন করা হয়েছিল।’’