ঝুঁকি: এ ভাবেই চলে জলযাত্রা। ছবি: সুমন বল্লভ
জেটির ‘গ্যাংওয়ে’ দিয়ে সাইকেল, মোটরবাইক এমনকি মালবোঝাই রিকশা নিয়ে প্রায় পন্টুন পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছেন লোকজন। সেখান থেকে যন্ত্রচালিত নৌকায় উঠিয়ে তাঁদের গঙ্গা পারাপার করানো হচ্ছে। মাত্র ১০-১৫ মিনিটেই নৌকা পৌঁছে যাচ্ছে হাওড়ার ঘুসুড়িতে। আবার একই ভাবে সেখান থেকে নৌকায় উঠে কাশীপুর জেটি ঘাটে এসে নামছেন যাত্রীরা। অভিযোগ, দিনের পর দিন এই বেআইনি পদ্ধতিতে যন্ত্রচালিত নৌকায় দু’চাকার যান, মালপত্র-সহ যাত্রী চাপিয়ে গঙ্গায় নৌকা ভাসাচ্ছেন মাঝিরা। পুরোটাই পুলিশের নাকের ডগায় চলছে বলে অভিযোগ।
কাশীপুর গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরি লাগোয়া কাশীপুর জেটিতে গিয়ে দেখা গেল, যন্ত্রচালিত নৌকাগুলি যে ঘাট থেকে ছাড়ত, তা ভেঙে গিয়েছে। ওই ঘাট থেকে নৌকায় ওঠার বাঁশের সাঁকো জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। তাই জলপথ পরিবহণের সরকারি জেটিই ব্যবহার করছে নৌকাগুলি। মাঝিদের দাবি, এই অনুমতি দিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এখান থেকে অনেকেই নিয়মিত হাওড়া যাতায়াত করেন। কিন্তু কম সময়ে সেখানে যাওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই। যেতে হলে বাসে হাওড়া স্টেশন এবং তার পরে অন্য কোনও ভাবে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়। এক দিকে,
কম সময়ে যাতায়াতের সুবিধা। অন্য দিকে, সাইকেল, মোটরবাইক নিয়ে যাওয়া যায়। আর তার জন্যই যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে এ ভাবে যান।
এমনই এক মাঝির সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সারাদিনে ছ’টি এ রকম নৌকা এপার-ওপার করে। শুধু বেআইনি পারাপার নিয়ে নয়, পাশাপাশি জেটির ভগ্নদশার অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীরা। অভিযোগ, জ্যোতিনগর বস্তির লোক ওই জেটিতে কাঠ বা মাছ ধরার জাল শুকোতে দেন। লঞ্চ যাত্রীদের একাংশের আরও অভিযোগ, এমন জায়গায় এটি, যে কারও চোখে পড়ে না। তাই প্রশাসনেরও নজর নেই।
কিন্তু পুলিশ কী ভাবে এই ধরনের নৌকায় যাত্রী পরিবহণের অনুমতি দিচ্ছে? ডিসি (বন্দর) ওয়াকার রাজা বলেন, ‘‘বিষয়টি বেআইনি। পুলিশ এক সময়ে এই পারাপার বন্ধ করে দিয়েছিল। নতুন করে চলছে জানা নেই। খোঁজ নিচ্ছি।’’
হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির স্টাফ অ্যান্ড ওয়ার্কার্সের সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগ জানিয়েছি। পরিবহণ দফতর যদি জেটি ব্যবহার করতে দেয়, আমরা কী বলব?’’