ফাইল চিত্র।
ঘিঞ্জি এলাকায় স্বল্প পরিসরে অনেক মানুষের বসবাস। সেখানে কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আক্রান্তকে ওই এলাকায় রাখতে অনেকেই আপত্তি করছেন বলে অভিযোগ উঠছে। এমনকি, কোনও কোভিড রোগী সুস্থ হয়ে ফিরলেও সংক্রমণের আশঙ্কায় তাঁকে এলাকায় থাকতে দিতে আপত্তি করছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে ঘিঞ্জি এলাকায় কোভিড রোগীদের জন্য সেফ হোম তৈরি করার দাবি উঠছে রাজারহাট-নিউ টাউন এলাকায়।
সম্প্রতি রাজারহাট নিউ টাউন বিধানসভার একটি পঞ্চায়েত এলাকার এক করোনা আক্রান্ত মহিলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অভিযোগ, সুস্থ হয়ে ফিরে আসার পরেও এলাকায় তাঁকে রাখা নিয়ে আপত্তি ওঠে। শেষে কয়েক জনের সহযোগিতায় একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির একটি ঘরে ঠাঁই হয় তাঁর। পরে সেখানেই তিনি মারা যান বলে জানান ওই মহিলার স্বামী। যদিও স্থানীয়দের একাংশের দাবি, ঘিঞ্জি এলাকায় সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকেই ওই মহিলাকে এলাকায় রাখা নিয়ে আপত্তি উঠেছিল। এই পরিস্থিতিতে ওই সব ঘিঞ্জি এলাকায় সেফ হোম করার দাবি করছেন স্থানীয়েরা।
রাজারহাট-নিউ টাউন বিধানসভার বিধায়ক তথা বিধাননগরের পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তাপস চট্টোপাধ্যায় জানান, খবর পেয়ে সেই রাতেই ওই মহিলার সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু ওই মহিলাকে এলাকায় থাকতে না দেওয়া সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ তাঁর কাছে আসেনি। তিনি আরও জানাচ্ছেন, ওই এলাকায় সেফ হোম তৈরি করা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে এবং তা দ্রুত কার্যকর করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু সব জায়গায় সেফ হোম তৈরি করা সম্ভব নয়। তবে সংক্রমিতকে এলাকাছাড়া করার মতো মানসিকতার বদলের জন্য মানুষকে সচেতন করার দিকে জোর দেওয়ার কথাও বলছেন তাপসবাবু। এ প্রসঙ্গে পঞ্চায়েতের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ আফতাবউদ্দিন জানান, করোনা-বিধি মেনে চলার প্রবণতা বাড়লেও এলাকায় এই নিয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাই সচেতনতা প্রচারে আরও জোর দিতে হবে। তবে ঘিঞ্জি এলাকায় সংক্রমণ যাতে না ছড়ায়, সে জন্য সেখানে সেফ হোম তৈরির ব্যাপারে দ্রুত ভাবনাচিন্তা চলছে। পুর এলাকায় সেফ হোম তৈরির ভাবনাচিন্তা করছে বিধাননগর পুরসভাও।
যদিও ঘিঞ্জি এলাকায় প্রয়োজনমতো একাধিক সেফ হোম তৈরি নিয়ে সংশয় রয়েছে প্রশাসনের মধ্যে। তবে এ নিয়ে বিকল্পের সন্ধান দিয়েছে বিধাননগর পুরসভার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড। সেখানে স্থানীয় ক্লাবঘরগুলিকেই ছোট ছোট সেফ হোম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর নির্মল দত্ত জানান, সেখানে ঘিঞ্জি এলাকায় সংক্রমণ রুখতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিধাননগরের পূর প্রশাসক কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, বিধাননগর, রাজারহাট গোপালপুর, রাজারহাট-নিউ টাউন বিধানসভার পুর এলাকায় মোট তিনটি সেফ হোম তৈরির চেষ্টা চলছে।