নিবেদিতা সেতু

টোল রাস্তায় বিপাকে রোগী ও পড়ুয়ারা

লাল বা নীল বাতির গাড়ি দেখলেই খুলে যাচ্ছে দড়ির অস্থায়ী ব্যারিকেড। কিন্তু ট্যাক্সি চেপে রোগী যদি সেই রাস্তা দিয়ে যেতে চান তা হলে অনুমতি মিলছে না। এমনকী, ট্রাফিককর্মীরা বললেও তাতে আমল দিচ্ছেন না টোলকর্মীরা। অ্যাম্বুল্যান্সে এলেই ব্যারিকেড টপকানোর ছাড়পত্র মিলবে— সাফ জানাচ্ছেন তাঁরা!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩৩
Share:

লাল বা নীল বাতির গাড়ি দেখলেই খুলে যাচ্ছে দড়ির অস্থায়ী ব্যারিকেড। কিন্তু ট্যাক্সি চেপে রোগী যদি সেই রাস্তা দিয়ে যেতে চান তা হলে অনুমতি মিলছে না। এমনকী, ট্রাফিককর্মীরা বললেও তাতে আমল দিচ্ছেন না টোলকর্মীরা। অ্যাম্বুল্যান্সে এলেই ব্যারিকেড টপকানোর ছাড়পত্র মিলবে— সাফ জানাচ্ছেন তাঁরা!

Advertisement

মঙ্গলবার সকাল থেকে পরপর কিছু ঘটনা ঘিরে সাধারণ মানুষ ও ট্রাফিক পুলিশদের সঙ্গে বচসায় জড়ান বালির নিবেদিতা সেতুর টোল আদায়ের কর্মীরা। হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তাদের কথায়, ‘‘টোলকর্মীরা কথাই শুনছেন না।’’

পুলিশ জানায়, তিন মাসের জন্য বালি ব্রিজের দক্ষিণেশ্বরমুখী রাস্তা বন্ধ করার সময় বালি হল্টের কাছে দু’নম্বর জাতীয় সড়ক ও নিবেদিতা সেতুর মধ্যে স্লিপ রোড বানায় পূর্ত দফতর। সিদ্ধান্ত হয়, বালি ও ডানকুনির দিক থেকে দক্ষিণেশ্বরে যাওয়া বাস, অ্যাম্বুল্যান্স ও বিশেষ কিছু গাড়ি টোল না দিয়েই ওই রাস্তা ধরে নিবেদিতা সেতুতে উঠতে পারবে। অন্য গাড়ি সাড়ে তিন কিমি ঘুরে টোল প্লাজা পার করে তবেই আসবে।

Advertisement

এখানেই তৈরি হয়েছে সমস্যা। পুলিশের অভিযোগ, টোলকর্মীরা শুধু ‘মাছি মারা কেরানি’র মতোই কাজ করছেন না, দুর্ব্যবহারও করছেন। সোমবারই এক যুবককে মারধরের অভিযোগ হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। ক’দিন আগে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ে থাকা একটি সংবাদমাধ্যমের গাড়িকে আটকানো ও হেনস্থার অভিযোগও দায়ের হয়। ওই ঘটনায় টোলের এক কর্মী পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

এ দিন সকালে এক হাসপাতালে ভর্তি হতে যাচ্ছিলেন উত্তরপাড়ার বাসিন্দা মিতা দত্ত। তাঁদের ট্যাক্সি স্লিপ রোড দিয়ে নিবেদিতা সেতুতে উঠতে যেতেই রে-রে করে ওঠেন টোলকর্মীরা। দাবি করেন, টোল প্লাজা পার করে তবেই ওঠা যাবে। মিতাদেবীর স্বামী কার্যত হাতে পায়ে ধরে অনুরোধ করলেও কোনও লাভ হয়নি।

সেখান দিয়েই কোন্নগরের বাসিন্দা ননীগোপাল দত্তকে ট্যাক্সিতে আরজিকরে নিয়ে যাচ্ছিলেন পরিজনেরা। টোলকর্মীরা জানান, অ্যাম্বুল্যান্সে না এলে ছাড়া যাবে না। এর পরেই ক্ষুব্ধ পুলিশকর্মী ও পথচলতি মানুষেরা প্রশ্ন তোলেন, কে কতটা অসুস্থ তা কী ভাবে বিচার করছেন টোলকর্মীরা? সবাই অ্যাম্বুল্যান্সে হাসপাতালে যাবেন এমন নিয়ম কোথায় আছে? এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা নিজের গাড়িতে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন বলে তাঁকেও আটকে দিয়েছিল। শেষে জোর করে পার করাই।’’

ছাড় মিলছিল না স্কুলগাড়িরও। গত সোমবার থেকে ট্রাফিককর্মীরা জোর করেই স্কুলগাড়িকে স্লিপ রোড দিয়ে নিবেদিতা সেতুতে তুলে দিতে শুরু করেছেন। নিবেদিতা সেতু টোল প্লাজার অপারেশন ম্যানেজার সমীর দেবনাথ বলেন, ‘‘আমি ভোর পর্যন্ত নিজে দাঁড়িয়ে ছিলাম। অসুস্থ বুঝলে অবশ্যই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। স্কুলগাড়িও ছেড়ে দিয়েছি। তবে পরে কী হয়েছে তা ঠিক জানি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement