ফাইল চিত্র।
এক বছর আগে এক লাফে সাড়ে তিন গুণ বেশি জরিমানা আদায় করেছিল কলকাতা পুর আদালত। কিন্তু ২০২০ সালে জরিমানা আদায়ের পরিমাণ আগের বছরের প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। এর পিছনে মূলত কোভিড পরিস্থিতিকেই দায়ী করছেন অনেকে। তাঁদের মতে, লকডাউন পর্বে স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হয়েছে। তার ফলেই জরিমানা আদায় কমেছে। তবে পুরসভার একটি সূত্রের খবর অনুযায়ী, তা সত্ত্বেও ২০২০ সালে যে জরিমানা আদায় হয়েছে, তা ২০১৮ বা ২০১৭ সালের তুলনায় অনেকটাই বেশি।
২০১৯ সালে কলকাতা পুর আদালত জরিমানা হিসেবে আদায় করেছিল ৯০ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা। আদালত সূত্রের খবর, ২০২০ সালে তার পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৪১ লক্ষ ৪১ হাজার টাকায়। ২০১৮ এবং ২০১৭ সালে এই জরিমানা আদায়ের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ২৩ লক্ষ ১২ হাজার এবং ২৫ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা।
তবে আদালত সূত্রের বক্তব্য, লকডাউনের শেষে বিভিন্ন মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হয়েছে। চলতি মাসে একাধিক মামলায় অভিযুক্তদের কারাবাসের পাশাপাশি জরিমানাও হচ্ছে। তার ফলে চলতি বছরে জরিমানা আদায়ের পরিমাণ অনেকটাই বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
মূলত অবৈধ নির্মাণের মামলাতেই জরিমানা করে পুর আদালত। পুরসভা কাজ বন্ধের নোটিস দেওয়ার পরেও কোনও নির্মাণকাজ বন্ধ না-হলে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয় এবং সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে অভিযুক্তদের জরিমানার পাশাপাশি কারাদণ্ডও হয়ে থাকে। আদালতের একটি সূত্রের দাবি, জরিমানা করার ক্ষেত্রেও পুর আদালতে একটি নির্দিষ্ট আইনের প্রয়োগ গত দু’বছরে বেড়েছে। পুর আইনের ৪০১ ধারায় এক লপ্তে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ছাড়াও ৩৬৮ ধারায় জরিমানা করা হচ্ছে। ওই আইন অনুযায়ী, পুরসভার নোটিস দেওয়ার পর থেকে মামলার নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত দৈনিক ১০০ টাকা হারে জরিমানা হয়। অবৈধ নির্মাণের বহু মামলা বছরের পর বছর পড়ে থাকে। বহু ক্ষেত্রে তদন্ত শেষ হওয়ার দু’-আড়াই বছর পরে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। তার ফলে সেই মামলাগুলিতে দৈনিক হারের জরিমানাও অনেকটা বেড়ে যায়।
তবে দিনের পর দিন চার্জশিট জমা না-দিয়ে ফেলে রাখা যে আদালত ভাল ভাবে নিচ্ছে না, সম্প্রতি একাধিক মামলার রায় দিতে গিয়ে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন আদালতের সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট প্রদীপকুমার অধিকারী। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে একাধিক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।