ভোগান্তি: শিশু কোলে দীর্ঘ লাইনে। মঙ্গলবার, রিজিয়োনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজিতে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
লিঙ্ক-বিভ্রাটের জেরে মঙ্গলবার রিজিয়োনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজি (আরআইও) এবং স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে এসে হয়রানির শিকার হলেন রোগীদের পরিজনেরা।
পঁয়ষট্টি বছরের বৃদ্ধ অমৃত কীর্তনিয়ার ডান চোখে ছানি পড়েছে। চিকিৎসার জন্য এ দিন ভোরে ঘণ্টাখানেক পায়ে হেঁটে প্রথমে স্টেশনে পৌঁছন পূর্বস্থলীর কোমলনগরের বাসিন্দা ওই প্রৌঢ়। সেখান থেকে ট্রেন ধরে সকাল ১০টা নাগাদ আসেন আরআইও-তে। ভেবেছিলেন, তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফিরবেন। সেই আশাই সার। ভোগান্তির লাইন দীর্ঘ হচ্ছে দেখে এক সময় বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে হাতে লিখে টিকিট দিতে শুরু করেন আরআইও-র কর্মীরা। কিন্তু সেই ব্যবস্থায় লাইন এগোলেও গতি ছিল না। ফলে অমৃতবাবু যতক্ষণে টিকিট কাউন্টারে পৌঁছন, ১২টা বেজে গিয়েছে!
একই রকম হয়রানির মুখে পড়েন কোন্নগরের বাসিন্দা বৃদ্ধা দেবিকা মুখোপাধ্যায়। তাঁর রেটিনা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ দিন ইঞ্জেকশন দেওয়ার পাশাপাশি চোখের স্ক্যান হওয়ারও কথা ছিল বৃদ্ধার। দেবিকার মেয়ে বিপাশা বলেন, ‘‘মাকে নিয়ে কাউন্টারের কাছে যখন পৌঁছলাম, ততক্ষণে দুপুর। স্ক্যানের যন্ত্র খারাপ থাকায় পরীক্ষা হয়নি। দুর্ভোগ আর কাকে বলে!’’
অন্য দিকে, স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে লিঙ্ক-বিভ্রাটের দোসর হয় প্রিন্টারের মন্থর গতি। রাজারহাটের বাসিন্দা হাবিবুর রহমানের কথায়, ‘‘একে তো দীর্ঘক্ষণ লিঙ্ক ছিল না। যদিও বা এল, প্রিন্টার থেকে টিকিট এত দেরিতে বেরোচ্ছে যে তার জন্য আরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে।’’ ট্রপিক্যাল সূত্রের খবর, সোমবারও প্রিন্টারের সমস্যার জেরে আরও বেশি রোগী দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।
দুর্ভোগ প্রসঙ্গে আরআইও-র অধিকর্তা অসীম ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের কম্পিউটার স্বাস্থ্য ভবনের সার্ভারের সঙ্গে যুক্ত। সমস্যার কথা জেনে আগে যেমন হাতে টিকিট দেওয়ার চল ছিল, সেই ব্যবস্থা করা হয়।’’ স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের অধিকর্তা প্রতীপ কুণ্ডু বলেন, ‘‘প্রিন্টারের সমস্যার কথা স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হয়েছে। রোগীদের যাতে হয়রানি না হয়, সে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’
স্বাস্থ্য ভবনের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘কী কারণে এমন হল, খতিয়ে না দেখে বলা সম্ভব নয়।’’