করোনা পরবর্তী সময়ে এমনিই পথে বাস কম। প্রতীকী ছবি।
বেসরকারি বাসে বেশি ভাড়া আদায় নিয়ে সম্প্রতি আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। সরকারি তালিকা মেনে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে কি না, ভাড়ার তালিকা ঝোলানো থাকছে কি না এবং অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হলে অভিযোগ জানানোর কী ব্যবস্থা রয়েছে, তা জানতে রাজ্যের কাছে হলফনামা চেয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। সময়ের মধ্যে তা জমা না পড়ায় ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় রাজ্য সরকারকে। তার পরেই নড়ে বসছে সরকার। যথেচ্ছ ভাড়া আদায় ঠেকাতে নজরদারি চালানো হবে বলে সোমবার জানিয়েছেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
কী ভাবে চলবে নজরদারি? বেসরকারি বাসে সরকারি ভাড়ার তালিকা রয়েছে কি না, তা দেখবেন পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা। বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে কি না, তা-ও যাত্রীদের থেকে জানবেন তাঁরা। অভিযোগ পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
তবে যাত্রীদের অভিযোগ, বেসরকারি বাস-মিনিবাসে সর্বত্রই বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকারি ধরপাকড় শুরু হলেই বাস উধাও হয়ে যায়। করোনা পরবর্তী সময়ে এমনিই পথে বাস কম। যাত্রীদের বক্তব্য, বেশি ভাড়া দিতে অনেকেই রাজি হচ্ছেন। ধরপাকড়ের জেরে বাসের সংখ্যা আরও কমলে সুরাহার বদলে ভোগান্তি বাড়বে কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। তখন ঘুরপথে আরও বেশি খরচ হতে পারে বলেও আশঙ্কা তাঁদের।
আগের তুলনায় যাত্রী কমে যাওয়ায় একাধিক বাস কাটা রুটেও চলে। রুটের যে অংশে যাত্রী সবচেয়ে বেশি, সেখানেই একাধিক বাস চলে বলেও অভিযোগ রয়েছে। একাধিক বাসমালিক সংগঠনের অভিযোগ, জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ছাড়াও বিমা, পারমিট-সহ নানা ক্ষেত্রে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। তা বিবেচনা করে ভাড়া উপযুক্ত হারে বাড়ানো উচিত।
‘সিটি সাবার্বান সার্ভিস’-এর সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘সরকারি বিধি মেনে আমরা বাস চালাতে বাধ্য। কিন্তু, মালিকেরা আগেই ক্ষতির সম্মুখীন। এর প্রভাব পড়ছে পরিষেবায়।’’ ‘অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির’ সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আয়-ব্যয়ের সমতা রাখার কথা আমরা বার বার বলছি। সেটা বজায় না থাকলে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়।’’ ‘বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘যাত্রীদের থেকে ভাড়ার উপরে অনুদান নিয়ে বাস চলছে। না হলে বাস বন্ধ হয়ে যাবে।’’