প্রতীকী ছবি।
বেশ চলছিল গল্পগুজব করে। কলকাতায় নেমে বিমান দাঁড়িয়ে যাওয়ার পরে তত ক্ষণে ৪৫ মিনিট কেটে গিয়েছে। দরজা তখনও খোলেনি। পাহাড় থেকে পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে ফিরছিলেন কলকাতার লাভলি মজুমদার। লাভলির কথায়, ‘‘৪৫ মিনিট পরে পাইলট ঘোষণা করেন, ‘বিমানে সন্দেহজনক কিছু রয়েছে, আপনারা শান্ত হয়ে যে যার আসনে বসে পড়ুন।’ তখনই গলা শুকিয়ে যেতে শুরু করে।’’
রবিবার বিকেলে ১৭৯ জন যাত্রী নিয়ে বাগডোগরা থেকে কলকাতার উদ্দেশে উড়েছিল এয়ার এশিয়ার বিমানটি। কিছু ক্ষণ পরে বেঙ্গালুরুতে উড়ান সংস্থার অফিসে ফোন করে বলা হয়, বিমানে সন্দেহজনক কিছু আছে। মাঝআকাশেই পাইলট সেই বার্তা পেয়ে যান এবং কলকাতায় তাঁকে জরুরি অবতরণ করানো হয়। কিন্তু, বিমান যত ক্ষণ আকাশে ছিল, তত ক্ষণ জরুরি অবস্থার কথা যাত্রীদের ঘুণাক্ষরেও বুঝতে দেননি তিনি।
কলকাতায় জরুরি অবতরণের পরে বে-তে গিয়ে বিমান দাঁড়ালে যাত্রীরা আসন ছেড়ে মালপত্র নিয়ে নামার জন্য লাইন করে দাঁড়িয়ে পড়েন। লাভলি বলেন, ‘‘আমাদের তাড়া ছিল না, তাই বসেই ছিলাম। জানলা দিয়ে মাঝেমধ্যে চোখে পড়ছিল, কাছাকাছি ঘুরছে অ্যাম্বুল্যান্স ও দমকলের ইঞ্জিন।’’ কিন্তু বিমানের দরজা খোলা হচ্ছিল না। মিনিট দশেক পর পর, ‘আগে আরও বিমান রয়েছে’, ‘এরোব্রিজ ফাঁকা নেই’ জাতীয় ঘোষণা করতে শুরু করেন পাইলট। ৪৫ মিনিট ধরে লাভলিরা গল্প করেই কাটাচ্ছিলেন। অবশেষে যাত্রীদের আসল ঘটনার কথা জানাতে বাধ্য হন পাইলট।
লাভলি বলেন, ‘‘বিমানে সন্দেহজনক কিছু আছে জানতে পেরে যাত্রীরা চুপ করে বসে যান। কেউ ভয় পেয়ে চিৎকার করেননি বা আতঙ্কে কেঁদে ফেলেননি। সত্যি বলতে কী, জরুরি অবস্থা যে হয়েছে, সেটাই তখনও পর্যন্ত বুঝে উঠতে পারিনি।’’ কলকাতায় নামার প্রায় সওয়া এক ঘণ্টা পরে বিমান থেকে যাত্রীদের নামানো হয়। বাসে করে টার্মিনালের কোণে এনে চলে দেহ তল্লাশি। যে বিমান সন্ধ্যা সওয়া ছ’টায় কলকাতায় নেমেছিল, সেখান থেকে বেরিয়ে বিমানবন্দরের বাইরে আসতে যাত্রীদের লেগে যায় প্রায় দু’ঘণ্টা।